তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে অযথাই বিতর্ক সৃষ্টি করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। বলেছেন, এ ধরনের বিতর্ক ঠিক নয়। এতে দুদেশের সম্পর্ক খারাপ হতে পারে।
বুধবার বিকেলে কলকাতার মহাকরণে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মমতা বন্দোপাধ্যায় এসব কথা বলেন। এর আগে মমতার সাথে এক বৈঠকে মিলিত হন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
তিস্তা চুক্তি সমর্থন করেন জানিয়ে মমতা বলেন, তবে এই চুক্তি সম্পাদনের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা রয়েছে। এজন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদনের পরেই এ নিয়ে আলোচনা করা হবে।
তিনি বলেন, তিস্তা চুক্তি সম্পাদন বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের দাবি। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ পানি পেলে কলকাতা খুশিই হবে।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, চুক্তি সম্পাদনে সমস্যা হলো, তিস্তা নদীতে পানির অভাব। এই সমস্যার কারণে নদী বিশেষজ্ঞ কল্যাণ রুদ্রের নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তিনি জানান, ১০ দিন আগে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি প্রতিবেদন দিলে এটা নিয়ে আলোচনা করা হবে। এটা নিয়ে চিন্তা করার কিছু নেই। উত্তরবঙ্গ আর বাংলাদেশ তিস্তার জল থেকে কেউ যেন বঞ্চিত না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। রাজ্যের কোনো ক্ষতি না করে তিস্তার পানিবণ্টনের বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।
মমতা বলেন, তিস্তা পানিবণ্টনকে কেন্দ্র করে অযথাই বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। এটা ঠিক নয়, এতে দুদেশের মধ্যকার সম্পর্ক খারাপ হতে পারে।
দীপু মনির সাথে বৈঠকে দুই বাংলার চলচ্চিত্র ও সংস্কৃতি আদান-প্রদানে একটি যৌথ টাস্কফোর্স গঠন করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
সাংবাদিকদের দীপু মনি বলেন, তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তি ছাড়াও দুই বাংলার পারস্পরিক সম্পর্কসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকের মাধ্যমে দুদেশের সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমন্ত্রণে সাড়া দিতে খুব শিগগিরই শেখ হাসিনা কলকাতা আসবেন।
এদিকে, বৈঠক সূত্র জানায়, মমতাকে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানান ডা. দীপু মনি। মুখ্যমন্ত্রী সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন। এরই অংশ হিসেবে ২০১২ সালের মার্চে মমতার ঢাকায় আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
এক ঘণ্টার এই বৈঠকের সময় উপস্থিত ছিলেন, নয়া দিল্লিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক করিম, কলকাতার উপরাষ্ট্রদূত মোস্তাফিজুর রহমান, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব সমর ঘোষ, নদী বিশেষজ্ঞ কল্যান রুদ্র।
বৈঠকে শেষে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে করেন মমতা এবং দীপু মনি।
এদিকে, এই বৈঠক নিয়ে ‘কিছু জানেন না’ এবং এই বিষয়ে ‘কোনো আলোচনা হয়নি’ বলে বুধবার ঢাকায় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মিজারুল কায়েস।
ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/ইউএন নিউজ