ইমা এলিস/বাংলা প্রেস, নিউ ইয়র্ক ::
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগ নেতা আবুল কাশেম ঢাকা বিমানবন্দরে গ্রেফতারের খবরে তোলপাড় শুরু হয়েছে নিউ ইয়র্কে। প্রস্তাবিত পিপলস ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অন্যতম সহ-সভাপতি আবুল কাশেম ১০০ কোটি টাকা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পালানোর চেষ্টা করছিলেন। গত বুধবার মধ্যরাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। এ খবর দ্রুত ছড়ালে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশিসহ আওয়ামীলীগ পরিবারে শুরু হয় তোলপাড়।  যুক্তরাষ্ট্রের বাংলা সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস এ খবর জানিয়েছে।
গ্রেফতার হওয়া আওয়ামীলীগ নেতা আবুল কাশেম দীর্ঘদিন ধরে নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিনে বসবাস করছেন। অতি সাম্প্রতি প্রস্তাবিত পিপলস ব্যাংকের অংশীদারিত্ব দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিউ ইয়র্ক প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছ থেকে তিনি হাজার হাজার ডলার নিয়েছেন।কিন্তু কাউকেই উক্ত ব্যাংকের অংশীদারিত্ব দেননি। এমন সময় তার গ্রেফতারের খবরে হতাশ হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগিরা।
গত বুধবার অর্থ পাচারের এক মামলায় বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার পর ঢাকা বিমানবন্দরে গ্রেফতার হন আবুল কাশেম। বৃহস্পতিবার সকালে সিআইডির কাছে আবুল কাশেমকে বুঝিয়ে দিয়েছে ইমিগ্রেশন পুলিশ। এরপর রিমান্ড চেয়ে তাকে আদালতে পাঠানো হলে শুনানির জন্য ২৫ জুন তারিখ রাখেন বিচারক। সেইসঙ্গে আবুল কাশেমকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। অর্থ পাচারের মামলায় বুধবার ই-কমার্স কোম্পানি আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর আলম শিকদারসহ চারজনের বিদেশযাত্রায় আদালত নিষেধাজ্ঞা দেয় তাদেরই একজন আবুল কাশেম। তিনি যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অন্যতম সহ-সভাপতি তিনি।
দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা পাওয়া বাকি দুজন হলেন- আলেশা মার্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মঞ্জুর আলমের স্ত্রী সাদিয়া চৌধুরী এবং আলেশা মার্টকে মোটরসাইকেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এস কে ট্রেডার্সের মালিক মো. আল মামুন। আবুল কাশেম গ্রেফতার হলেও অন্যরা পলাতক রয়েছেন।
এ মামলার একটি অভিযোগে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত পিপলস ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালকের পদ পাওয়ার জন্য এবং শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে হাজারো গ্রাহকের কাছ থেকে নেওয়া একশ কোটি টাকা মঞ্জুর আলম ওই ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবুল কাশেমকে দিয়েছিলেন।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগ নেতা আবুল কাশেম সাবেক এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও বর্তমান গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান প্রবাসী নিজাম চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তিনি চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় তার ব্যাংকের সাবেক এমডি পি কে হালদার এনআরবি গ্লোবালসহ আরও তিনটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে বড় ধরনের টাকাও সরিয়েছেন।
সব মিলিয়ে অন্তত সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার অনিয়ম–দুর্নীতির দায়ে ভারতীয় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। বর্তমানে তিনি কলকাতার কারাগারে আটক রয়েছেন। আবুল কাশেমের গ্রেফতারে অপর আওয়ামীলীগ নেতা সাবেক এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও বর্তমান গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান প্রবাসী নিজাম চৌধুরীর ব্যাংকের অর্থ পাচার প্রসঙ্গ নিয়েও চলছে আলোচনার ঝড়।
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here