জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান গতকাল শনিবার ফরিদপুরের ৬টি প্রতিষ্ঠানে ঝটিকা সফর করেন। এসময় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে চিকিৎসার অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার চিত্র দেখে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং অবিলম্বে পরিস্থিতি উন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। তার সফর কালে হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে উদ্বোগ ও উৎকন্ঠা দেখা যায়। তার সফরের পর পুরো স্বাস্থ্য বিভাগে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান গতকাল শনিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত যথাক্রমে ফরিদপুর মুসলিম মিশন, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ট্রমা সেন্টার, জেনারেল হাসপাতাল ও ফরিদপুর ওয়েল ফেয়ার ফাউন্ডেশনের ফ্রি-প্লাষ্টিক সার্জারী ক্যাম্প, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এবং জিলা স্কুল পরিদর্শন করেন। তার সফর কালে ফরিদপুরের এডিসি অরুন চন্দ্র মহোত্তম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয় কুমার বসাক, এসএসপি- মনিরা সুলতানা, মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব কাজী আরফান আশিকসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যাম্পাসে অবস্থিত ট্রমা সেন্টার পরিদর্শন কালে অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে ড. মিজানুর রহমান সাব্বির নামের ৭ বছরের একটি শিশুকে অপারেশনের টেবিলে অসুস্থ্য অবস্থায় কাতরাতে দেখে তাৎক্ষনিক ভাবে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সম্পৃক্ত সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ডেকে এনে এঘটনার ব্যাখ্যা চান। জানা যায়, শুক্রবার বিকেলে দুর্ঘটনার শিকার এই শিশুটি হাসপাতালে ভর্তি হবার পর থেকে গতকাল শনিবার বেলা ১১টা পর্যন্ত কোন চিকিৎসক শিশুটিকে চিকিৎসা দিতে আসেনি। এই অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ড. মিজান সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও নার্সদের ভৎসনা করেন এবং ভবিষ্যতে এ ধরণের অমানবিক আচরণ থেকে বিরত থাকার জন্য সর্তক করে দেন। তিনি হাসপাতালে এক্সরে ম্যাসিন চালু থাকার পরও গরিব রোগীদের বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে এক্সরে করানোর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সুপারিশ করাকে গুরুতর অনিয়ম হিসেবে আখ্যা দেন এবং এজন্য সংশিষ্ট চিকিৎসক ও কর্মচারীদের তিরস্কার করেন।
ট্রমা সেন্টার পরিদর্শন শেষে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের বলেন, সাধারণ মানুষকে বোকা বানানোর সব প্রক্রিয়া এই হাসপাতালে বিদ্যমান। এখানে একটি দালাল ও প্রতারকচক্র ভেতরে ও বাইরে কাজ করছে। সাধারণ মানুষের কাছে তথ্য না থাকার কারণে তারা তাদের সেবার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তিনি দালাল চক্রকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে তাগিদ দেন। তিনি আরো বলেন, এখানে গরীব মানুষের জন্য সেবার দুয়ার খোলা নেই। গরীব মানুষের জন্য প্রাপ্য সকল চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আন্তরিক হওয়ার পরামর্শ দেন।
ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/ বিভাষ দত্ত/ফরিদপুর