আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলায় পাকিস্তানি তালেবান প্রধান হাকিমুল্লাহ মেহসুদ নিহত হয়েছেন বলে দেশটির নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
পাকিস্তানের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, শুক্রবার উত্তর ওয়াজিরস্তানে ড্রোন হামলায় পাঁচ সহযোগীসহ হাকিমুল্লাহ নিহত হন।
এর আগে বেশ কয়েকবার হাকিমুল্লাহ মেহসুদ নিহত হওয়ার খবর প্রকাশ হলেও পরে তার সত্যতা মেলেনি। তবে শুক্রবার রাতে পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থা, সেনা ও জঙ্গি সূত্র থেকে তার নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।
এক জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, আমরা নিশ্চিত যে, ড্রোন হামলায় হাকিমুল্লাহ মেহসুদ নিহত হয়েছেন।
নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে পাকিস্তানি দৈনিক ডনের অনলাইন সংস্করণে বলা হয়, উত্তর ওয়াজিরস্তানের দান্দে দারপাখেল এলাকার একটি মসজিদে বৈঠক শেষে সেখানে থেকে চলে যাওয়ার পথে হাকিমুল্লাহর গাড়িতে ড্রোন হামলা হয়।
হামলায় তালেবান কমান্ডার আব্দুল্লাহ বাহার মেহসুদ ও তারিক মেহসুদসহ তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) প্রধানের পাঁচ সহচর নিহত হয়েছেন।
তবে তার নিহত হওয়ার ব্যাপারে পাকিস্তান সরকার বা তালেবানের পক্ষ থেকে এখনো নিশ্চিত করে কিছু বলা হয়নি।
উপজাতি অধ্যুষিত উত্তর ওয়াজিরস্তানের প্রধান শহর মিরামশাহের পাঁচ কিলোমিটার উত্তরের দান্দে দারপাখেল এলাকা পাকিস্তানি তালেবানের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ সম্প্রতি ওয়াশিংটনে এক বৈঠকে তার দেশে ড্রোন হামলা বন্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রতি আহ্বান জানানোর এক সপ্তাহ পর এ ঘটনা ঘটলো।
গত বুধবার পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, ২০০৮ সালে পাকিস্তানের উপজাতি অধ্যুষিত এলাকায় যুক্তরাষ্ট্র ড্রোন হামলা চালানো শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত এতে ৬৭ জন বেসামরিক নাগরিক এবং দুই হাজার ১৬০ জন জঙ্গি নিহত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলা নিয়ে পাকিস্তানিদের মধ্যে ক্ষোভ থাকলেও ওয়াশিংটনের ভাষ্যমতে আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী উপজাতি অধ্যুষিত এলাকায় জঙ্গিদের দৌরাত্ম কমাতে এটা গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র।
ড্রোন হামলাকে পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বের লংঘন অভিহিত করে দেশটির সরকার দীর্ঘদিন ধরে এর প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। অবশ্য অনেক কর্মকর্তা ব্যক্তিগতভাবে মনে করেন, দেশ থেকে জঙ্গিদের উৎখাতে এ হামলা গুরুত্বপূর্ণ।