কক্সবাজার জেলার প্রধান নদীরানী হিসেবে পরিচিত শহর সংলগ্ন বাঁকখালী নদীটি দিন দিন সৌন্দর্য্য হারাচ্ছে। তিন যুগের ও বেশী সময় ধরে বাঁকখালী নদীতে ড্রেজিং না্ করার ফলে নাব্যতা ও গভীরতা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।।পাশাপাশি এক্ষেত্রে নদী ভরাট হয়ে যাওয়ার সুযোগ নিয়ে এক শ্রেনীর ভূমিদস্যূ নদীর কিনারে মাটি ও ময়লা ভরাট করে চালাচ্ছে দখল প্রক্রিয়া। ফলে উপকূলীয় অঞ্চলে যাওয়ার নদীপথ হয়ে যাচ্ছে সংকীণ ও ঝুকিপূর্র্ণ। ইতিপূর্বে শহরের পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠন বাঁকখালী নদীর কিনারায় মানববন্ধন ও শহরের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ সমাবেশ এবং জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপির মাধ্যমে নদীটি ড্রেজিং ও দখলমুক্ত করে বাঁকখালী নদীর হারানো জৌলুস প্রাণ প্রবাহ ফিরিয়ে আনার দাবী জানান।
সরেজমিন জানা যায় শহরের প্রায় দশ হাজার মাছ ধরা নৌকা প্রতিদিন সাগর থেকে মাছ ধরে বাকখালী নদীর পাশে স্থাপিত কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ও বিভিন্ন ঘাটে নিয়ে আসে। উপকূলীয়দের যাতায়তের মাধ্যম হিসাবে শহর কেন্দ্রীক ব্যবসা ও নানান কাজ হিসাবে এই নদীকে ব্যবহার করচ্ছে।অথচ বাঁকখালী নদীর ড্রেজিং করার বিভিন্ন পদক্ষেপ ও বাস্তবায়ন এখনো রয়েছে ফাইলবন্দী রয়েছে বলে জানা যায়। নদীটি নাব্যতা হারিয়ে প্রতিনিয়ত ভরাট হয়ে যাচ্ছে। পাহাড় নিধন করার ফলে বৃষ্টির পানির সাথে মাটি মিশ্রিত বাঁকখালী নদীতে গিয়ে পড়ায় ভরাট হয়ে যাচ্ছে নদীর কিয়দংশ। অপরদিকে বাঁকখালী নদীর কিনারে বসবাসকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ব্যবসায়ীক স্বার্থের কথা চিন্তা করে প্রভাবশালী মহল কস্তুরাঘাট থেকে রাশিয়ান ফিশারী ঘাট পর্যন্ত অবৈধভাবে ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ করছে। উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায় বার লাখ যাতায়াতের মাধ্যম হিসাবে বাঁকখালী নদীটি ব্যবহৃত করছে। প্রতিদিন উপকূলীয় অঞ্চল মহেশখালী, মাতারবাড়ী, কুতুবদিয়াসহ বিভিন্ন ঘাটে ৫-৬ হাজার যাত্রী চলাচল করছে। বিশেষ করে ভাটার সময় নদীর বিভিন্ন স্থানে নৌকার ও ইঞ্জিন চালিত বিভিন্ন বোট আটককে গিয়ে চলাচলের বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এ ধরনের প্রতিনিয়ত শিকার হচ্ছে নৌপদ যাত্রীরা। অচীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ নদীতে ড্রেজিং মাধ্যমে বাঁকখালী নদীর ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার দাবী জেলাবাসীর। কক্সবাজার থেকে-মহেশখালীর দুরত্ব প্রায় ৭ কিলোমিটার। ইতিমধ্যে এই পথ দিয়ে যাতায়াতের সময় বিভিন্ন চ্যানেলে চর উঠায় অনেক ক্ষেত্রে দুর্ঘটনাও ঘটছে। বাঁকখালী নদীতে বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে নৌ চলাচল প্রায় বন্ধ থাকে। নদীর এপার ওপার হেটে পারাপারে দৃশ্য দেখা যায়। বাঁকখালী নদীকে ঘিরে শহরের ঐতিহ্যবাহী কস্তুরাঘাট বদর মোকাম ঘাট, ৬নংঘাট, ফিশারী ঘাট, মাঝির ঘাট, রাশিয়ান ফিশারী ঘাটের বিভিন্ন স্থানে মাটি ভরাটের দৃশ্য এবং নির্মাণ কাজ চলার দৃশ্যে প্রতিনিয়ত ঘটছে। একসময় বাঁকখালী নদীর প্রবেশদ্বার কস্তুরাঘাটে দেশী বিদেশী যাত্রীবাহী জাহাজ ভিড়তো। তখন রমরমা কস্তুরাঘাট থেকে ওই জাহাজগুলো যাত্রী ও পন্য নিয়ে দেশের বিভিন্ন চলে যেতো। সময়ের পরিবর্তনের ফলে সে অবস্থা এখন আর নেই। ব্যবসায়ীক মহল জানান, এক সময়কার বিআইটিডবি ও ভবন বাঁকখালী নদী দেখভালসহ বিভিন্ন নৌযানে তদারকি অফিস মাধ্যম ছিল। বর্তমানে উক্ত অফিসটি বিশ্রামাঘারে পরিণত হয়েছে। চট্টগ্রামের নৌ পরিবহন অফিস থেকে কক্সবাজারে বিআইটিডবি ও ভবনের কাজসহ বিভিন্ন নৌযানের তদারকি করছে। এদিকে বাঁকখালী নদীর তীর ঘেষে পড়ে উঠা দখলবাজ চক্রটি প্যারাবন নিধন করে চলেছে। কক্সবাজার জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবী বাঁকখালী নদীতে অতিশীঘ্রই ড্রেজিং শুরম্ন করে নদীর প্রাণপদ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে প্রশাসনসহ দায়িত্বরত কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেন।
ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/কালাম আজাদ/কক্সবাজার