ডেস্ক রিপোর্ট :: আজ শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির ‘ডায়াবেটিস জার্নি’ অ্যাপটি সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।

ডায়াবেটিস রোগের সর্বশেষ চিকিৎসা ও লক্ষণসহ আপডেট জানতে চিকিৎসকদের জন্য ‘ডায়াবেটিস জার্নি’ নামে একটি অ্যাপ নিয়ে এসেছে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি (বাডাস)।

অ্যাপটি ‘ডায়াবেটিস কেয়ার বাডাস গাইডলাইন’ অনুযায়ী কাজ করবে। বাডাস এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি যৌথভাবে এই চিকিৎসা নীতিমালাটি প্রণয়ন করেছে। অ্যাপটি নির্মাণ ও চিকিৎসা নীতিমালা প্রণয়নে বাডাসের সহযোগী হয়ে কাজ করেছে বিশ্বের বৃহত্তম ইনসুলিন নির্মাতা কোম্পানি নভো নরডিস্ক।

আজ শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ‘ডায়াবেটিস জার্নি’ অ্যাপটি সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। এ সময় জানানো হয়, এই অ্যাপটি কীভাবে ব্যবহার করতে হবে সে বিষয়ে চিকিৎসকদের জন্য দেশব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মসূচিও চালু করা হবে।

বাডাসের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান বলেন, ‘চিকিৎসকদের সহায়ক অনুষঙ্গ হিসেবে অ্যাপ ও নীতিমালাটি তৈরি করা হয়েছে। এর ফলে ডায়াবেটিস রোগীদের ওষুধ দেওয়ার ক্ষেত্রে আরো বিচক্ষণতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন চিকিৎসকরা।’

ডায়াবেটিস রোগীদের স্বাস্থ্য সেবায় ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার এবং চিকিৎসকদের সুবিধার্থে অ্যাপ ও নীতিমালা ভিত্তিক চিকিৎসা ব্যবস্থার সূচনা করতেই ডায়াবেটিক সমিতি এই প্রচেষ্টা নিয়েছে বলে জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের সভাপতি (নির্বাচিত) অধ্যাপক আখতার হোসেন বলেন, ‘ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে এবং এক্ষেত্রে আরো মানসম্মত চিকিৎসা জরুরি হয়ে পড়েছে।‘ তিনি আরো বলেন, ‘অ্যাপ ও নীতিমালাটি মানসম্মত চিকিৎসা নিশ্চিতকরণে সহযোগী হবে এবং এর মাধ্যমে রোগীরা আরো স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবনযাপন করতে পারবেন।‘

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক মো. রোবেদ আমিন বলেন, ‘চিকিৎসকদের সক্ষমতা আরো বাড়ানো এখন সময়ের দাবি এবং ডায়াবেটিস চিকিৎসার আধুনিকায়নে এই উদ্যোগগুলো নেওয়া হয়েছে।’

বাডাসের মহাসচিব মো. সায়েফ উদ্দিন বলেন, স্বাস্থ্য সেবায় ডিজিটাল প্রণালী চালু করতে নভো নরডিস্কের সহায়তায় বাডাস অনেকগুলো উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ‘ডায়াবেটিস জার্নি’ অ্যাপ এবং দেশে প্রথমবারের মতো জাতীয় ডায়াবেটিস রোগী নিবন্ধন- সেই ডিজিটাল উদ্যোগেরই উদাহরণ; যা সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ রূপকল্পের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ অ্যান্ডোক্রাইন সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক মো. ফারুক পাঠান গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, দেশে বর্তমানে ৮৪ লাখ ডায়াবেটিস রোগী রয়েছে। তবে ডায়বেটিক সমিতির ২০১৮ সালের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, দেশের ২৫ ভাগ মানুষের ওপর ডায়াবেটিসের প্রভাব রয়েছে। অনেকেই জানে না তারা ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত। জনসচেতনতা ও জীবনযাপনের পরিবর্তন আনতে পারলে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব।

অনুষ্ঠানে ঢাকা জেলার সিভিল সার্জন ডা. আবু হোসেন মো. মইনুল আহসান, বাংলাদেশ অ্যান্ডোক্রাইন সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক মো. ফারুক পাঠান, জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা নেটওয়ার্কের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. এম এ সামাদ, বারডেম জেনারেল হাসপাতালের মহাপরিচালক অধ্যাপক এম কে আই কাইয়ুম চৌধুরী, ডায়াবেটিস এশিয়া স্টাডি গ্রুপের মহাসচিব এবং সেন্টার ফর গ্লোবাল হেলথ রিসার্চের কো-অর্ডিনেটর ডা. বিশ্বজিৎ ভৌমিক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির প্রোগ্রাম ম্যানেজার ড. আবদুল আলীম, নভো নরডিস্ক বাংলাদেশের ডিরেক্টর অব কমার্শিয়াল অ্যাফেয়ার্স মো. তানবির সাজীব, ডিরেক্টর অব ক্লিনিক্যাল, মেডিকেল, রেগুলেটরি অ্যান্ড কোয়ালিটি অ্যাফেয়ার্স মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here