ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম
আসাদুজ্জামান জুয়েল, ডামুড্যা থেকে ফিরে, হাজারো মানুষের চোখের জলে ও ভালবাসয় সিক্ত হয়ে চীর বিদায় নিল এ অঞ্চলের তথা দেশের মানুষের জননেতা আবদুর রাজ্জাক। জননেতাকে শেষবারের মত দেখতে এবং শেষ শ্রদ্ধা জানাতে শরীয়তপুর জেলার ৬টি উপজেলাসহ পাশ্ববর্তী মাদারীপুর, বরিশাল, চাঁদপুর ও ঢাকা থেকে আসে তাঁর ভক্ত শুভাকাঙ্খী নেতা-কর্মী-বন্ধুরা।
জননেতা আবদুর রাজ্জাককে নিয়ে হেলিকপ্টারটি সোমবার সকালে ডামুড্যার পূর্ব মাদারীপুর কলেজ মাঠে পৌছানোর পূর্বেই ডামুড্যা উপজেলা পরিষদ চত্তর কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। কলেজ মাঠ থেকে প্রথমে লাশ নিয়ে যাওয়া হয় তার প্রিয় পৈতৃক বাড়িতে। সেখানে লাশ নেয়ার পর এক হৃদয় বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। স্বজনদের কান্নায় পরিবেশ ভারি হয়ে উঠে। নিজ বাড়িতে কিছু সময় রেখে লাশ আনা হয় উপজেলা পরিষদ চত্তরে। সেখানে জেলা পরিষদ, জেলা আওয়ামীলীগ, জেলা বিএনপি, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বিভিন্ন উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা, জেলা আইনজীবী সমিতিসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুলের তোড়া দিয়ে জননেতাকে শেষবারের মত শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে জোহরের নামাজের শেষে ডামুড্যা উপজেলা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে জেলা প্রশাসক মোঃ সানোয়ার হোসেন ও পুলিশ সুপার এ কে এম শহিদুর রহমান পিপিএম এর উপস্থিতিতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয় মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম এ সংগঠককে। জেলা প্রশাসনের শ্রদ্ধা নিবেদনের পরই তাকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। জননেতা আবদুর রাজ্জাকের জানাজা নামাজ পরিচালনা করেন ডামুড্যা উপজেলা মসজিদের ঈমাম মাওলানা আবদুল হাই।
জানাজা নামাজের পূর্বে জননেতা আবদুর রাজ্জাক সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করেন কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ নেতা আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জীত সেন গুপ্ত, ডেপুটি স্পিকার কর্ণেল (অবঃ) শওকত আলী, আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, আবদুর রাজ্জাকের দুই পুত্র ফাহিম রাজ্জাক ও নাইম রাজ্জাক। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানক, শরীয়তপুর-১ আসনের সাংসদ ও আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, উপ-দপ্তর সম্পাদক মৃনাল কান্তী দাস, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র অ্যাডভোকেট শওকত হোসেন হিরণ, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এনামুল হক শামীম, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুর রব মুন্সী, সহ-সভাপতি আলহাজ্ব নুর মোহাম্মদ কোতোয়াল, জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট জামাল শরীফ হিরু প্রমূখ।
এদিকে জেলা আওয়ামীলীগ ঘোষিত ৭ দিনের শোক কর্মসূচী অব্যাহত আছে। শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির আজীবন সদস্য জননেতা আবদুর রাজ্জাকের মৃত্যুতে জেলা আইনজীবী সমিতি কালো ব্যাচ ধারণ, সমিতির কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন, সোমবার পূর্ণ দিবস কর্ম বিরতির পালন করেন। জেলা বিএনপি তাদের কেন্দ্র ঘোষিত পূর্ব নির্ধারিত প্রতিবাদ কর্মসূচী বাতিল করে জননেতার জানাজায় অংশগ্রহণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।