ঠাকুরগাঁওয়ের তিনটি গ্রামে গবাদি পশুর মোড়ক দেখা দিয়েছে। গত সাত দিনে ২০টি গরু মারা গেছে। এতে এলাকা জুড়ে দেখা দিয়েছে আতংক। চিকিৎসা করেও গরু বাঁচাতে না পেরে কৃষকরা পানির দরে তা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে।
সদর উপজেলার শুকানপুখুরী ইউনিয়নের পশ্চিম শুকান পুখুরী, সারডুবি ও জাঠিভাঙ্গা গ্রামে গত সাত দিনে বাছুরসহ ২০টি গরু প্রাণ হারিয়েছে বলে জানায় এলাকাবাসী। ওই গ্রামগুলোর ঘরে ঘরে আক্রান্ত গরুর সংখ্যা বাড়ছে । চিকিৎসা দিয়েও কৃষকরা তাদের গরু রক্ষা করতে পারছেন না। প্রতিদিনই দুই-একটি করে গরু মরছে। এই আতংকে কৃষকরা তাদের শেষ সম্বল গরু নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। কোন কিনারা না পেয়ে অনেকে পানির দরে গরু বিক্রি করে দিচ্ছেন।
সারডুবি গ্রামের উপেন্দ্র নাথ রায়ের হালের বলদসহ চারটি গরু ছিল। শনিবার সকালে তিনটি গরু মারা যায়। হালের বলদ হারিয়ে তিনি এখন হা-হুতাশ করছেন। ওই গ্রামের কামিনী রায়ের ৩টি গরুর মধ্যে ২টিই মারা গেছে। তারও অবস্থা একই দশা দাঁড়িয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত উপেদ্র নাথ রোগের বিবরণ দিয়ে বলেন, হঠাৎ করে তার দুটি গরুর পেট ফুলে যায়। এছাড়া মুখ দিয়ে লালা ঝড়ে মারা যায়। অন্যটির পাতলা পায়খানা আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারায়।
ক্ষতিগ্রস্ত আজিজুল ফকিরের ছেলে মহসিন আলী জানায়, চার দিকে গরু মৃত্যুর আতংকে অনেকেই কম দামে গরু বিক্রি করে দিচ্ছেন। এই সুযোগে গরুর দালালরা ফাঁয়দা নিচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই গ্রামের মনোরঞ্জন ওরফে কাল্টুর ৪টি, আল মামুনের ১টি, শাহিন মিয়ার ২টি, মকবুলের ২টি আজিজুল ফকিরের ২টি, আব্দুল হামিদের ১টি, নবী পাড়া গ্রামের আব্দুল গফুরের ১টি, পশ্চিম গুকানপুখুরী গ্রামের হায়দার আলীর ২টি ও জাঠিভাঙ্গা গ্রামের সুধীর রায়ের ১টি গরু মারা গেছে। এ বিষয়টি প্রাণী সম্পদ বিভাগ খাদ্যে বিষক্রিয়া জনিত কারণে গরু গুলো মারা গেছে বলে দাবি করেছে। জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মোচ্ছাদ্দিকুর রহমান জানান, গ্রামবাসীদের আতংকিত না হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এছাড়া নতুন ধানের খড়, কাঁচা ঘাস ও ঠান্ডা পানি না খাওয়ানোর জন্য বলা হয়েছে।
ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/তানিয়া সরকার/ঠাকুরগাঁও