সরকার প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করে শিশু শিক্ষার মানোন্নয়নে নানামুখী উদ্যোগ নিলেও তা কার্যকর হচ্ছে না কক্সবাজারের দুর্গম এলাকার বিদ্যালয়গুলোতে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পাচ্ছে না প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা। এমনই একটি বিদ্যালয়ের নাম উনছিপ্রাং রেজি. বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। জেলার টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উনছিপ্রাং গ্রামে ১৯৯৩ সালে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষ ও বেঞ্চের অভাবে পাঠদান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা রয়েছেন নাজুক অবস্থায়। খোলা আকাশের নিচে চলছে চারশ’ শিশুর পাঠদান।
সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা যায়, তীব্র শীত, ঘন কুয়াশা ও কনকনে ঠাণ্ডা বাতাসে সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ে স্কুলের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন গ্রাম-মহল্লার শিশুরা। বই, খাতা, কলমের ব্যাগ কাঁধে নেওয়ার পাশাপাশি প্রতিটি শিশুর হাতে থাকে চটের ছালা। স্কুলে গিয়ে মাটিতে ছালা বিছিয়ে বসে পড়ে শিশুরা। সেখানে শীতল মাটিতে খোলা আকাশের নিচে বসে তাদের পাঠদান করা হয়। চারজন শিক্ষক স্কুলের প্রায় ৪শ’ ছাত্রছাত্রীকে এভাবে পাঠদান দিয়ে যাচ্ছেন। স্কুলের চেয়ার-টেবিল ও শ্রেণীকক্ষ না থাকায় কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের নিয়মিত এ কষ্টকর পরিবেশে লেখাপড়া করতে হচ্ছে। সরেজমিনে আরও দেখা যায়, বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেণীতে ৬১, প্রথম শ্রেণীতে ১৬৪, দ্বিতীয় শ্রেণীতে ১৩১, তৃতীয় শ্রেণীতে ৭৪, চতুর্থ শ্রেণীতে ৩৩ জন ও ৫ম শ্রেণীতে ১৮ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। বিদ্যালয়ে অবকাঠামোগত সমস্যা প্রকট। স্কুল প্রতিষ্ঠার পর ১৯৯৬-২০০১ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একটি এনজিও বিদ্যালয়ের জন্য তিনকক্ষের একটি ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়। তিনটি কক্ষের দুটিতে শ্রেণীকক্ষ, একটিতে অফিস রুম। ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় শিক্ষকরা অফিসেও পঞ্চম শ্রেণীর ক্লাস নিচ্ছেন। অপর দুটি কক্ষে ঠাসাঠাসি করে বসে অন্য ক্লাসের শিক্ষার্থীরা। প্রধান শিক্ষক সুজন বড়ুয়া জানান, শ্রেণীকক্ষ না থাকায় বাধ্য হয়েই খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করান হচ্ছে। স্কুল কমিটির সভাপতি মৌলভী আবদুল মন্নান জানান, নিজের জমি দান করে এলাকার স্বার্থে এই স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/কামাল আজাদ/কক্সবাজার