টেকনাফের বহুল আলোচিত শিশু আলো হত্যা মামলা নিয়ে নতুন চক্রান্ত শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেন শিশুর পিতা এবং টেকনাফে উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ। ৯ ডিসেম্বর শুক্রবার সকালে কক্সবাজার শহরের একটি আবাসিক হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ৭ সেপ্টেম্বর তার ৭ বছরের শিশু পুত্র আলি উল্লাহ আলোকে জবাই করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতার হওয়া ২ জন তাদের জবানবন্ধিতে ঘটনার নেপথ্যের গডফাদারদের নাম প্রকাশ করেছে। পুলিশ ওই গডফাদারকে সনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়াকে বাঁধাগ্রস্ত করতে গডফাদাররা তৎপরতা শুরু করেছে।

তিনি বলেন, শিশুদের সার্বিক নিরাপত্তা, সুন্দর জীবনের জন্য তিনি তার শিশু হত্যার বিচারের জন্য তৎপর। সকল বাঁধা এবং প্রভাব মুক্ত হয়ে এ হত্যাকান্ডের সুষ্টু বিচার হবে এমনটাই তার প্রত্যাশা। কিন্তু মামলাকে বাঁধাগ্রস্ত করতে গত ৭ ডিসেম্বর টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপের হাজি মৌলভী আবদুল জলিল এর পুত্র এবং চট্টগ্রাম শহরে বসবাসকারি মহিবুল্লাহ বাদি হয়ে ৫ লাখ টাকা চাঁদার অভিযোগে ১৪ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলার দায়ের করেন। এমামলায় তাকে প্রধান আসামী করা হয়েছে। অন্যান্য আসামীরা তার নিকটআত্মীয়, প্রতিবেশী ও আলো হত্যা মামলার স্বাক্ষী। মামলায় টেকনাফ সমুদ্র সৈকতে মহিবুলস্নাহর মালিকাধিন একটি জমিতে কাজ করতে বাঁধা প্রদান, ৬ ডিসেম্বর হামলা এবং ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবিতে বাদিকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ আনা হয়।

তিনি বলেন, তার শিশু পুত্র আলো হত্যা ঘটনার দিন আলোচিত সন্ত্রাসী মহিবুলস্নাহ তার ব্যবহার করা একটি লাল গাড়ি নিয়ে একাধিকবার ওই এলাকায় তাকে ঘুরতে দেখা গেছে। ঘটনার দিন জনতার ধাওয়া খেয়ে মুহিবুল্লাহ লাল গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যায়। এর পর থেকে তিনি এলাকায় যাননি। যদিও ২১ সেপ্টেম্বর টেকনাফ স্টেশনের একটি হোটেলে প্রভাবশালী কয়েকজন ব্যক্তির সাথে একটি বৈঠকে তিনি যোগদান করেছেন বলে শুনা গেছে। মামলায় গডফাদার হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার প্রক্রিয়াকে বাঁধাগ্রস্ত করতে স্থানীয় এমপি আবদুর রহমান বদির ইন্ধনে আলো হত্যার ঠিক ৩ মাসের মাথায় এসে এ মামলাটি করা হয়েছে। এর আগেও স্থানীয় এমপি তার ব্যবসায়অ প্রতিষ্ঠানে হামলা, তার, তার পিতা ও বিএনপি নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মিথ্যা মামলা করেছে।

এক প্রশ্নের জবাবে আবদুল্লাহ বলেন, ৬ ডিসেম্বর সকালে টেকনাফ সমুদ্র সৈকতে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ৬ ডিসেম্বর সমুদ্র সৈকত এলাকায় তিনি যাননি। কোনপ্রকার ঘটনা সম্পর্কেও তিনি অবহিত নন। কিন্তু ৭ ডিসেম্বর বিনা তদন্তে পুলিশ একটি মামলা লিপিবদ্ধ করেছে। তিনি একজন শীর্ষ করদাতা, ঠিকাদার, মার্কেট, আমদানী-রপ্তানীকারক, কমিশন এজেন্ট, পেট্রোল পাম্প, মাকের্ট, আবাসিক হোটেল, ব্রিক ফিল্ড এর মালিক। এ ব্যবসায়ী হিসেবে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা তার পক্ষে সম্ভব কিনা এমন প্রশ্ন তার।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপি’র সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী বলেন, টেকনাফ ও উখিয়া আইনের শাসন নেই। পুলিশ সুপারের পরিবর্তে ব্যক্তি বিশেষের কাছে জিম্মি রয়েছে পুলিশ। শুধু বিএনপি’র নেতাকর্মী নয়; ওখানে আওয়ামীলীগের অসংখ্য নেতাও আইনের শাসন পাচ্ছে না। হয়রানীর শিকার হচ্ছে নানাভাবে। তিনি মামলাটি সুষ্টু তদন্ত করে প্রত্যাহারের দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে টেকনাফ উপজেলা বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মৌলভী আবদুল মান্নান, উখিয়া উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক সরওয়ার জাহান চৌধুরী, টেকনাফ উপজেলা যুবদল নেতা হাসান সিদ্দিকী, টেকনাফ উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক মোহাম্মদ আলী, জেলা ছাত্রদল নেতা মোহাম্মদ কাইয়ুম, টেকনাফ পৌর ছাত্রদলের আহবায়ক আবদুস সালাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/কালাম আজাদ/কক্সবাজার

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here