মোঃ আজিজুর রহমান ভূঁঞা বাবুল, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি ::

লবণ ব্যবসার টাকা অগ্রিম দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ফুসলিয়ে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থেকে ব্যবসায়ী মোঃ আব্দুল্লাহ (৫০) কে ময়মনসিংহের নান্দাইল নিয়ে এসে ঘরে আটকে রেখে মোবাইল ফোনে পরিবারের কাছে ৫লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করার ঘটনার পর অপহৃতকে উদ্ধার এবং ৩ অপহরণকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ভিকটিম মোঃ আব্দুল্লাহ টেকনাফ উপজেলার নয়াপাড়া গ্রামের মৃত সৈয়দ আহাম্মেদের ছেলে।

রোববার(০৪ জুন) সকালে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় নান্দাইলের উপজেলার শেরপুর ইউনিয়নের শেরপুর গ্রাম থেকে ভিকটিম ব্যবসায়ী মোঃ আব্দুল্লাহকে উদ্ধার এবং নারী সহ ৩ অপহরণকারী গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে- নান্দাইলের উপজেলার শেরপুর ইউনিয়নের শেরপুর গ্রামের সুমি আক্তার, ও তার স্বামী মাজহারুল ইসলাম ওরফে সাফি, একই এলাকার জসীম উদ্দীনের ছেলে মোঃ আসাদ এবং ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার দক্ষিণ দালালপুর গ্রামের রাজু আহমেদের ছেলে মোঃ হৃদয় আহমেদ।

নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জনাব মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান এ সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, গত ৩১ মে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থেকে ব্যবসায়ী মোঃ আব্দুল্লাহ নিখোঁজ হন। পরবর্তীতে এ ব্যাপারে তার পরিবার টেকনাফ থানায় গত ৩ জুন
একটি জিডি (নং-১৪৪) করেন। এরই প্রেক্ষিতে ৩ জুন রাত ১০ টার দিকে ভিকটিম এর আত্মীয়-স্বজন নান্দাইল মডেল থানা পুলিশকে অবহিত করেন যে নান্দাইলে অবস্থানরত কতিপয় ব্যক্তি মোবাইল ফোনে তাদের কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করছেন এবং নির্দিষ্ট একটি মোবাইল নাম্বারে বিকাশে টাকা পাঠাতে বলেছেন।

বিষয়টি নান্দাইল মডেল থানা পুলিশের নজরে আসিলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌরীপুর সার্কেল এর নির্দেশে নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জনাব মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান এরনেতৃত্বে আসামিদের অবস্থান সনাক্তপূর্বক সঙ্গীয় ফোর্সসহ অভিযান পরিচালনা করে ভিকটিম মোঃ আব্দুল্লাহকে উদ্ধার করা হয়। এসময় নারীসহ ৩জন অপহরণকারীকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকালে অপহরণকারীদের কাছ থেকে ১ টি চাকু, ০৪টি মোবাইল সেট এবং দশ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

ওসি আরও বলেন, উদ্ধারের পর ভিকটিম আব্দুল্লাহ পুলিশকে জানান,আসামিগণ তাকে লবন ব্যবসার টাকা অগ্রিম দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ফুসলিয়ে গত ২ জুন আসামী সুমি আক্তার এর বাড়িতে নিয়ে আসেন। এরপর তাকে একটি রুমের ভেতর আটক রেখে অমানবিকভাবে মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতন করেন এবং মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে ৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। এ সময় আসামীগণ তাকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করেন।

ভিকটিম ভয়ে আতঙ্কে এবং প্রাণে বাঁচার জন্য আত্মীয়-স্বজনের নিকট থেকে আসামিদের প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে ৭০ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে আসামিদেরকে প্রদান করেন। এ বিষয়ে নান্দাইল মডেল থানায় একটি অপহরণ মামলা রুজু প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এঘটনায় আরো কেউ জড়িত রয়েছে কিনা তা যাচাই করা হচ্ছে বলেও জানানপুলিশের ওই কর্মকর্তা।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here