এক দশকে বাংলাদেশে টেলিভিশন সাংবাদিকতার ব্যাপক প্রসার ঘটেছে৷ সেই সাথে প্রসার ঘটেছে নারী সাংবাদিকতারও৷

নাজনীন মুন্নী৷ বর্তমানে বাংলাদেশে টিভি সাংবাদিকতায় পরিচিত এক নাম৷ আজ থেকে বছর সাতেক আগে সংবাদপত্রের কাজ দিয়ে শুরু হয় তার সাংবাদিক-জীবন৷ বিজ্ঞান বিভাগে পড়ালেখা করার পর সাংবাদিকতায় কেন আগ্রহী হলেন তিনি?

মুন্নী বলছেন, সাংবাদিকতা একটি খুবই চ্যালেঞ্জিং পেশা৷ এই চ্যালেঞ্জটি তার ভালো লেগেছে৷ তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় বন্ধুদের দেখে সাংবাদিকতায় আসতে আগ্রহী হয়েছেন তিনি৷

নাজনীন মুন্নীর মতোই বাংলাদেশে অনেক নারী আগ্রহী হচ্ছেন সাংবাদিকতায়, বিশেষ করে টিভি সাংবাদিকতায়৷ টিভি সাংবাদিকতায় নারীদের বিশেষ আগ্রহের কারণগুলো নিয়েই বলছেন একাত্তর টেলিভিশনের এই জেষ্ঠ্য প্রতিবেদক৷

‘‘শুধু টিভি সাংবাদিকতায় নয়, পত্রিকাতেও অনেক বেশি নারী সাংবাদিক কাজ করতে আগ্রহী হচ্ছেন৷ তবে, টেলিভিশন সাংবাদিকতার একটি বিশেষ দিক হলো যে, এখানে শুধু কাজ নয়, কাজের পাশাপাশি একধরণের গ্ল্যামার এববং জনপ্রিয়তার ব্যাপারও আছে৷ তাই, অনেক বেশি সংখ্যবক নারী যোগ দেয় টেলিভিশন সাংবাদিকতায়।

মুন্নী সাহা, টেলিভিশন সাংবাদিকতায় এক অগ্রগণ্য নাম৷ ঘাটে-মাঠে ঘুরে সংবাদ তুলে আনা নারী সাংবাদিক হিসেবে টিভি পর্দায় প্রথম তাকেই দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ৷ বিশ বছর আগে নবিশি প্রতিবেদক হিসেবে সাংবাদিকতাশুরু৷ আজ তিনি কাজ করছেন বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় সংবাদ চ্যানেল এটিএন নিউজের বার্তা প্রধান হিসেবে৷

টেলিভিশন সাংবাদিকতায় নারীদের আগ্রহের কারণগুলো ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ব্রডকাস্ট জার্নালিজমে কিছু বিশেষ সুবিধা আছে যেমন ট্রান্সপোর্ট সুবিধা, কাজের পরিবেশ এবং সব মিলিয়ে টিভির পরিবেশটা খুবই নারীবান্ধব ৷ তাই অনেক বেশি নারী এই মাধ্যমে কাজের জন্য আগ্রহী হচ্ছেন৷

একটা সময়ে ভাবাই হতো যে, মেয়েরা শুধু ফিচার করবে বা সফট্ স্টোরি করবে৷ কিন্তু সেই সময়টাও এখন পাল্টেছে৷ একথাই বৈশাখী টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল৷

আর মুন্নী সাহা বলছেন, বাংলাদেশে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিতে একটা বিরাট পরিবর্তন এসেছে৷ সাংবাদিকতায় নারীদের এগিয়ে আসাটা সেই পরিবর্তনেরই ছবি৷

অর্থনীতি থেকে শুরু করে রাজনীতি, অপরাধ, খেলাধুলা এবং অনুসন্ধানী প্রতিবেদন সব ধরণের কঠিন বিষয় নিয়েই  কাজ করছেন মেয়েরা৷ এর পরেও পুরুষতান্ত্রিক পরিবেশে কাজ করতে গিয়ে আজো তাদের কিছু সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় বলে জানাচ্ছেন বৈশাখী টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল৷

সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল আরো বলছেন যে, টেলিভিশনে অনেক মেয়েকে সাংবাদিক হিসেব দেখা যায় বটে, কিন্তু সামগ্রিক বিবেচনায় পুরুষ সাংবাদিকদের তুলনায় এই সংখ্যা খুবই কম৷

পুরুষের তুলনায় নারী সাংবাদিকের সংখ্যা এখনো  কম, এখনো  কাজ করতে গিয়ে কিছু সমস্যায় পড়তে হয় নারী সাংবাদিকদের৷ কিন্তু নাজনীন মুন্নী, মুন্নী সাহা এবং মঞ্জুরুল আহসান বুলবল বলছেন, যে সমাজের ভেতর থেকে একধরণের পরিবর্তন শুরু হয়েছে৷ আর এই পরিবর্তন বড় ইতিবাচক এবং আশা জাগানিয়া৷

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/স্টাফ রিপোর্টার

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here