টিপাইমুখে বাঁধ নির্মাণের পদক্ষেপ নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং বাংলাদেশেকে দেয়া অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন মহাজোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ।
বৃহস্পতিবার বনানী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করে তিনি আগামী ১০ ডিসেম্বর টিপাইমুখ অভিমুখে জাতীয় পার্টির লংমার্চ ঘোষণা করেন।
এরশাদ বলেন, ‘আমি মনে করি যে আশ্বাস তিনি (ভারতের প্রধানমন্ত্রী) দিয়েছিলেন, তা ভঙ্গ হয়েছে। কারণ টিপাইমুখে বাঁধ নির্মাণে তারা চুক্তি সই করেছে।’
গত জুলাইয়ে বাংলাদেশ সফরে এসে মনমোহন সিং বলেছিলেন, বাংলাদেশের ক্ষতি হয়, এমন কোনো পদক্ষেপ তার সরকার নেবে না।
সফরের চার মাসের মাথায় বাংলাদেশকে না জানিয়ে ভারতের দুটি কোম্পানির সাথে বরাক নদীর টিপাইমুখে বাঁধ নির্মাণে চুক্তি সই করে ভারত।
বিদ্যুত প্রকল্পে বাঁধ হলে তার দলের আপত্তি নেই জানিয়ে এরশাদ বলেন, ‘টিপাইমুখে বাঁধ নির্মাণের আগে আন্তর্জাতিক চুক্তির মাধ্যমে গ্যারান্টি দিতে হবে যে, এখানকার পানি চাষাবাদের জন্য অন্য কোথাও নেওয়া হবে না। এছাড়া আমি আশা করব, বিদ্যুতের জন্য বাঁধ নির্মাণ হলে বাংলাদেশ যেন বিদ্যুতের অংশীদারিত্ব পায় এবং বিদ্যুৎ কিনতে পারে।’
বরাক নদীর প্রধান দুটি শাখা সুরমা ও কুশিয়ারা নামে বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চল দিয়ে প্রবেশ করে মেঘনার সাথে মিশেছে।
পরিবেশবাদীদের আশঙ্কা, কোনো কারণে যদি এই বাঁধ ধ্বসে পড়ে, তাহলে সিলেট অঞ্চল গভীর পানির নিচে তলিয়ে যাবে। বাঁধ দিয়ে বরাক নদীর পানি অন্য দিয়ে সরালে এ অঞ্চলের নদীগুলো শুকিয়ে যাবে। এর ফলে বাংলাদেশ এই বাঁধে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
এরশাদ আরো বলেন, দেশের প্রতিটি মানুষ এবং রাজনীতিবিদ এই বাঁধ নির্মাণ নিয়ে উৎকণ্ঠায় আছে। টিপাইমুখে বাঁধ নির্মাণের আগে যৌথ জরিপ হওয়া উচিত। তার ভিত্তিতেই জনগণকে বলতে হবে- বাঁধ হলে ক্ষতি হবে কিনা।
ভারত বাংলাদেশের ঘনিষ্ট বন্ধু উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাঁধ নির্মাণ বিষয়ে ভারতের সাথে আলোচনা হবে। আলোচনা ফলপ্রসু না হলে প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ারও ঘোষণা দেন সাবেক এই স্বৈরশাসক।
সংবাদ সম্মেলন থেকে, আগামী শনিবার টিপাইমুখে বাঁধ নির্মাণের প্রতিবাদে সিলেটের উদ্দেশে জাতীয় পার্টির লংমার্চ কর্মসূচিতে সর্বস্তরের জনগণকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় পার্টির মাহাসচিব এ বি এম রুহুল আমীন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী জি এম কাদের প্রমুখ।
ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/ঢাকা