মোঃআশরাফুর ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি ::
কয়েকদিন থেকেই যেন থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে, একটু বিরতি তো আবার অনেকক্ষন টানা ঝড়ছে বৃষ্টির এ ধারা। এমন বর্ষনমুখর প্রকৃতিকে অনেকেই তুলনা করছেন আশি^না ডাওরের সাথে। প্রকৃতির এমন রুপ অনেকের কাছে যেমন উপভোগ্য, হলেও মাথা ব্যাথার কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে খেটে খাওয়া মানুষ ও কৃষকের কাছে। অনেক কৃষকের কষ্টের ধান ডুবে গেছে টানা বৃষ্টির কারনে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার রুহুল বাধ এলাকায় অগ্রনী সেচ প্রকল্পের ফসলের মাঠের পাশে ছাতা নিয়ে দাঁড়িয়ে জনা জনা দশেক কৃষক। ওই মাঠসহ আশে পাশের মাঠের ধান ডুবে গেছে বৃষ্টির পানিতে। সব মিলিয়ে ওই এলাকায় প্রায় এক হাজার বিঘা জমির ধান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে জানান কৃষকরা।
অগ্রনী সেচ প্রকল্পের সাবেক সহ সভাপতি আলাউদ্দীন জানান, অগ্রনী সেচ প্রকল্পের আওতায় কামারের মাঠ, ডাগরা চাঁইপাড়া, সেহালা, মহাডাঙ্গা, সাহাবির বিল, সুড়কিজল সহ বেশ কিছু এলাকার ৭০০ বিঘা জমির ধান ডুবে গেছে, পানি কমলেও অন্তত ৬০-৭০ ভাগ ধান নষ্ট হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, ‘‘ এখন প্যাটে শীষ হয়্যা গেছে ধান গাছেন, তার শীষে পানি ঢুক্যা গেলে ওই ধান আর হবে না নষ্ট হয়্যা যাবে, পানি নামলেও ঢুব্যা যাওয়া জমির ধান খুব ভাল হবে না, ১০ আনায় নষ্ট হয়্যা যাবে। ’’
এসময় কথা হয়, তরিকুল ইসলাম, আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুল মজিদ , আব্দুল হান্নান নামে আরো কয়েকজন কৃষককের সাথে। তারা বলেন,সব কিছু খরচ করে ধান লাগিয়েছিলেন, ভালই ছিলো, কিন্ত আশ্ধিনা ডাওরে যে সব কিছু শ্যাষ হয়া যাবে কে জানত। এখন কিছুই করার নাই।
আব্দুর রাজ্জাক নামে এক কৃষক বলেন, জমির মালিকের তো কোন ক্ষতি হবে না, যা মরন আধি কৃষকের । হামার মত যারা জমি আধি করি তারা টাকা খরচ কর্যা বীছন, সাহার দিয়্যা ফলসটা করছিনু, ধানটা সারা বছরের মুখের দানা, কিন্ত এখন তো পানিতে ডুব্যা গেল। যা খরচ হয্যাছে সবই পানিতে গেলে। জমির মালিক তো এ্যাতো কিছু বুঝবে না। শুধু চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় না, বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, অনান্য উপজেলার ফসলী জমি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে মাঠের রোপা আমন, ছাড়াও ক্ষতি হয়েছে মাসকলাই,গ্রীষ্নকালীন পেয়াজ, পেয়াজের বীজতলা, নাবী পাট বীজ, তিলসহ বিভিন্ন শাকসবজির ক্ষেত।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার জানান, বৃষ্টিতে জেলার ১৪ হাজার ৩৪২ জন কৃষকের প্রায় ৩ হাজার ১৪৫ হেক্টর জমির ফলস ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের আগামীতে সরকারি বিভিন্ন প্রনদনার মাধ্যমে সহযোগিতা করা হবে।