ঝিনাইদহে সরকারী চাল সংগ্রহ অভিযানে মিলারদের মাঝে চাল বন্টনে চরম অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। চাল বন্টনের এই অসম বিভাজনে সদর উপজেলার মিলারদের মাঝে ক্ষোভ ও অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে।
মিলাররা জানিয়েছেন ৫২২ মেট্রিক টন চাল স্বাভাবিক ভাবে বরাদ্দ দিয়ে বাকী এক হাজার মেঃ টন চাল বন্টনে টন প্রতি ২৫’শ টাকা করে ঘুষ নেওয়া হয়েছে। এতে বানিজ্য করা হয়েছে ২৫ লাখ টাকা।
বিভাজন পত্র থেকে জানা গেছে ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় ৩টি অটো রাইচ মিলের মধ্যে ডাকবাংলা বাজারের মোয়াজ্জেম হোসেনকে মাত্র ৪০ মেঃ টন ও একই বাজারের আলাউদ্দীনকে ৪০ মেঃ টন দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে হাটগোপালপুর বাজারের তপন কুণ্ডুর রাইচ মিলকে দেওয়া হয়েছে ৩৭৪ মেঃ টন। হাসকিং রাইচ মিলের ক্ষেত্রেও এ রকম অসম বণ্টন নীতি গ্রহণ করা হয়েছে।
বিভাজন নিয়ে ডাকবাংলার অটো রাইচ মিলের মালিক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন চাল বিভাজন সঠিক হয়নি। এ নিয়ে চরম দুর্নীতি করা হয়েছে। কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে মুখ দেখে চাল বণ্টন করা হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন বেশি দামের সময় তাদের উপর অতিরিক্ত সরকারী বরাদ্দ চাপিয়ে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করা হয়েছে। অথচ এখন বাজার মুল্যের চেয়ে সরকারী ক্রয় মূল্য বেশি। কেজি প্রতি মিলারদের ৩ টাকা যখন লাভ থাকবে। তখন তাদেরকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।
এব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কালাচাঁদ সিংহ জানান, সদর উপজেলায় সরকারী ভাবে ১৫২২ মেট্রিক টন চাল কেনা হবে। সে মোতাবেক ২৬ জন মিলাররের মাঝে চাল বণ্টন করা হয়েছে।
তিনি বিভাজন নিয়ে মিলারদের ক্ষোভ সম্পর্কে জানান, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা চেয়ারম্যানদের পরামর্শে চাল বিভাজন করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে তিনি ক্রয় কমিটির সভাপতি হলেও তার কোন মন্তব্য বা বক্তব্য নেই।
বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা ও সরকারী চাল সংগ্রহ কমিটির সদস্য সচিব মোঃ হাবিবুর রহমান জানান, কোন নিয়ন কানুনে এ রকম বিভাজন করা হয়েছে তা উপদেষ্টারাই ভাল জানেন।
তবে তিনি স্বীকার করেন অটো রাইচ মিলের ক্ষেত্রে বিভাজন সঠিক হয়নি। তিনি জানান কারা টন প্রতি ২৫’শ টাকা ঘুষ কারা নিয়েছে তা তার জানা নেই।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আসাদুল হক জানান, গত ৫ ডিসেম্বর থেকে সরকারী ভাবে চাল কেনার নিয়ম থাকলের ১৫ ডিসেম্বর চাল সংগ্রহ অভিযান কমিটির সভায় বিভাজন করা হয়েছে।
২৮ টাকা প্রতি কেজি চাল মিলারদের কাছ থেকে সরকার ক্রয় করবে এবং আগামী বছরের ২৮ ফেব্রয়ারী পর্যন্ত সংগ্রহ অভিযান চলবে বলে তিনি জানান। তিনিও বণ্টন নিয়ে কোন মন্তব্য করতে চান নি।
এ ব্যাপারে চাল সংগ্রহ অভিযানের উপদেষ্টা স্থানীয় এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তারা ফোন ধরেন নি।
ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/শাহারিয়ার রহমান রকি/ঝিনাইদহ