শাহারিয়ার রহমান রকি, ঝিনাইদহ
দেশে এবার প্রচন্ড শৈত্য প্রবাহে বোরোর বীজ তলা চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস’ হয়েছে। এর থেকে বাদ যায়নি ঝিনাইদহ জেলা। প্রচন্ড শৈত্য প্রবাহের তীব্রতায় ঝিনাইদহ জেলায় বোরোর বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছেঅ। ফলে কৃষকেরা চড়া দামে ধানের বীজ কিনে বানিয়েছিলেন বীজতলা। তবুও তা থেকে উৎপন্ন চারা নষ্ট হওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকেরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
এ রকম শৈত্য প্রবাহ চলতে থাকলে সব বীজতলা নষ্ট হয়ে যাবে। ফলে বোরো চাষের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন চাষীরা। ফলে বোরো চাষের যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তা ব্যাহত হওয়ারও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এবার ঝিনাইদহ জেলায় প্রায় ৯০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। বীজতলা করা হয়েছে প্রায় ৪ হাজার হেক্টর জমিতে। কিন’ শৈত্য প্রবাহে আগাম বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওযাই চারাগুলো লাল রং ধারন করছে ও কুঁকড়ে যাচ্ছে। জেলার সদর উপজেলা, শৈলকুপা , হরিণাকুডু, কালীগঞ্জ, কোটচাঁদপুর ও মহেশপুর সহ ৬টি উপজেলাতেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বোরো বীজতলা।
শৈলকুপার বোরো চাষী তরিকুল জোয়ারদার জানান, বেশী দামে বীজ কিনে বীজতলা বানালেও প্রচন্ড শৈত্য প্রবাহে তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বীজতলার চারা লাল হয়ে কুঁকড়ে গেছে এবং তা ক্রমশঃ শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলে ঐ চারা জমিতে রোপন করে ধান তৈরী করা যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে না।
মহেশপুরের বোরো চাষী শাহনেওয়াজ জানান, ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি সাধারণ বীজ ও ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি হাইব্রীড বীজ কিনে বীজতলা বানিয়ে সে বীজতলা প্রচন্ড শৈত্য প্রবাহে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ ভাবে শৈত্য প্রবাহ আর কয়েক দিন চললে সব বীজতলা নষ্ট হয়ে যাবে। তখন সময়ের সাথে সাথে চারা সঙ্কটের মতো কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে এই জেলার কৃষকদের।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ কৃষি সমপ্রসারণ অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিধান চন্দ্র জানান, এ বছর ঝিনাইদহ জেলায় ৯০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সে হিসাবে বীজতলা করা হয়েছে প্রায় ৪ হাজার হেক্টর জমিতে। যা চাহিদার তুলনায় বেশী। কারণ গত বছরও শৈত্য প্রবাহে বীজ তলা নষ্ট হয়েছিল। সে অভিজ্ঞতা থেকেই চাষীরা এবার বীজতলা একটু বেশীই করেছে। সে কারণে কিছু বীজতলা নষ্ট হলেও তেমন কোন সঙ্কট সৃষ্টি হবে না বলেও তিনি জানান। আর আবহাওয়া যদি ভাল হয় যায় তবে ক্ষতি টুকু কাটিয়ে ওঠা যাবে।