
অসহায় মানবতা, নিরীহ বস্তিবাসী
-জুনাইদ আল হাবিব
আমার মাথায় তেল নেই, তাই কেউ আর তেল দিতে আসে না। আমার মনটা অসহায়, তাই কেউ ভালোওবাসে না। আমি বড় নিরীহ, তাই আমায় কেউ একটু আহারও বাড়িয়ে দেয় না!
রাষ্ট্র, আমি আজ বড্ড বিধ্বস্ত মন নিয়ে বেঁচে আছি। তোর কূটনীতি আমাকে আজ বড্ড ঘৃনিত করেছে। আমাকে মারার জন্য তোর চাই, একটু কূট কৌশল। তবে, আমাকে করতে পারবি খালাশ,
তাইতো আমাকে আগুনের লেলিহান শিখা জ্বালিয়ে মাঝে মাঝে জ্বালাস!
রাষ্ট্র, আমার পেটে আজ বড্ড খিদে। তুমি জানোই, আমি না দু’মুঠো ভাতের জন্য কত লোকের সামনে হাত পাতি। অথচ, তবুও তুমি আমাকে আজ ছাড় দাওনি। বুঝেছি, আমি বস্তির মানুষ, তাই বুঝি আমাকে ভাবছো ফানুস?
রাষ্ট্র, তুমি সাইনবোর্ড লাগিয়ে প্রমাণ করেছ, এখানে নির্মিত হবে বড় বড় অট্টালিকা।
তাই তুমি আমার টিনের ঘরে জ্বালিয়েছ আগুনের শিখা!
জানো রাষ্ট্র, আমার না এ দেশে বাঁচার অধিকার আছে। আমার দু’মুঠো ভাতের অধিকার, বস্ত্রের অধিকার, শিক্ষার অধিকার, চিকিৎসার অধিকার, বাসস্থানের অধিকার। তুমিতো আমার কোন অধিকারই পূর্ণ করোনি। তারপরেও কি করলে? আমার অধিকার আমাকে না বুঝিয়ে দিয়ে তুমি উল্টো আমার সংগ্রামী জীবনে আঁধার নামিয়ে দিয়েছ!
রাষ্ট্র, তোমার না দায়িত্ব ছিল, আমার বাসস্থানের অধিকার নিশ্চিত করা? অথচ, আমার বাসস্থানের অধিকার নিশ্চিত দূরে থাক, দশ ধারে গিয়ে দু’মুঠো ভাতের জন্য লড়াই করে যে ছোট্ট ঘরে আমার মাথার গোঁজার ঠাঁই হতো, তাও তুমি কেড়ে নিয়েছ।
রাষ্ট্র, জানো তুমি। তোমার বুকের কিছু মানুষ আমার ঘরে আগুন জ্বালেনি। আগুন জ্বালিয়েছে আমার বুকের মধ্যে। আমার হৃদয়ের মধ্যে। দাউ দাউ করে সে আগুন জ্বলেছে আমার বুক। আমি একটু কান্না করার ভাষাও হারিয়ে ফেলেছি।
রাষ্ট্র, তোমার বুকের মানুষগুলো আজ বড় বেঈমান। তাদেরকে এখন কি করে করি সম্মান? রাষ্ট্রযন্ত্র তুমিও রাখোনি কথা, দিয়েছ ব্যাথা। সুখে রাখছো কত রাঘব বোয়াল! আমি চুপ হয়ে দেখি, কত যে বড় তাদের চোয়াল!
রাষ্ট্র, শেষমেশ তোকে বলে দিতে চাই, তুই নষ্টদের দখলে, তুই অষ্টদের নকলে, তুই গিলে খাচ্ছিস আমাদের ভাগ্য সকলের!