জামালপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়ক এবং হামিদপুর বাজার সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়ে সম্পন্ন না হওয়ায় মহাসড়ক, বাজার ও নব নির্মিত বানার ব্রিজ ব্রহ্মপুত্রের ভাঙ্গনের শিকারে পরিণত হয়ে উঠেছে। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্কসহ সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরম্নদ্ধে প্রচন্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, দুটি প্যাকেজে জিওবি’র অর্থায়নে এবং বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)’র আওতায় জামালপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়ক, হামিদপুর বাজার এবং নবনির্মিত বানার ব্রিজ সংরক্ষণে দুটি প্যাকেজে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। মোট ২৯০ মিটার দৈর্ঘ্য প্রকল্পে মাটি ও বালু দ্বারা ভরাট, সিসি ব্লক স্থাপন ও ডামপিং-এর মাধ্যমে সংরক্ষণ কাজ শুরু হয়। প্রকল্প দুটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে প্রথম প্যাকেজের ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ১কোটি ৭৮ লাখ টাকা এবং দ্বিতীয় প্যাকেজে ৯৫ লাখ টাকা।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ পায় সিরাজগঞ্জ জেলার মেসার্স ‘ডিজেএস’ নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। প্রথম প্যাকেজের কাজ গত ২০০৭-০৮ অর্থ বছরে বালু, মাটি ও সিসি ব্লক স্থাপন ও ডামপিং কাজ শুরু হয়ে শেষ হয় ২০০৯-১০ অর্থ বছরে। প্রকল্পের দ্বিতীয় প্যাকেজের কাজ ২০১০ এর মাঝামাঝি শুরম্ন হয়ে ২০১১ এর জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও অজ্ঞাত কারণে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দ্বিতীয় প্রকল্পে শতকরা ৫০ভাগ শেষ করেছে মাত্র। এবং বর্তমানে প্রায় ৭ মাস ধরে প্রকল্পের কাজ অসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।

এ ব্যাপারে বৃধবার দুপুরে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জামালপুর কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হলে প্রকল্পের এষ্টিমেটর মর্তুজ আলী ইউনাটেড নিউজ২৪ ডট কমকে বলেন, দুটি প্যাকেজের মধ্যে দ্বিতীয় প্রকল্পের ১৩৭ মিটার কাজের মধ্যে ইতিপূর্বে ১১২ মিটারের কাজ শেষ হয়েছে। বাকীটুকুর কাজ বন্ধ রয়েছে। তিনি আরও জানান, প্রকল্পের অংশ বর্ধিত করে একটি চাহিদাপত্র উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে। আশা করি অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তা বরাদ্দ হয়ে আসবে। কিন্তু আগামী বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে এই প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত না করা হলে নদের পানি তোড়ে এবং বর্ষায় নব নির্মিত নদের পাড় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আশঙ্কা রয়েছে। সরেজমিনে প্রকল্প স্থান পরিদর্শন করে দেখা গেছে, মহাসড়ক থেকে ব্রহ্মপুত্র নদের দূরত্ব কোন কোন অংশে মাত্র ৫ ফুট থেকে ১০-১৫ ফুট পর্যন্ত। এতে, সরকারের কোটি কোটি গচ্ছা যাবে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা।

এদিকে, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মাটি, বালু ও লেবারদের মোটা অংকের মজুরি বকেয়া রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মজুরি ও নির্মাণ সামগ্রীর অর্থ বকেয়া থাকায় স্থানীয় শ্রমিকদের মাঝে এনিয়ে প্রচন্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তার কাছে লেবার ও পাওনাদাররা মাসের পর মাস ধর্না দিয়েও টাকা পাচ্ছেনা। এতে শ্রমিকদের মাঝে ক্ষোভ, হতাশা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বানার ব্রিজ থেকে নান্দিনা পূর্ব বাজার আবুল বিড়ি ফ্যাক্টরি পর্যন্ত একটি ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি বাধ নির্মাণ করা গেলে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে বসবাসরত কয়েক হাজার পরিবার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বীমা প্রতিষ্ঠান ও গোদামঘরসহ হাজার কোটি টাকার সম্পদ ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা পাবে।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/ছাইদুর রহমান/জামালপুর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here