ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডেস্ক :: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য বিএনপিসহ দেশের সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন যে, অপরাধ সংঘটন ও অগ্নিসংযোগের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে বিএনপির আসন্ন সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহন করা উচিত।
নগরীর তেজগাঁওয়ে দলের ঢাকা জেলা কার্যালয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রথম সভায় সূচনা বক্তব্যে তিনি বলেন, নির্বাচনের দরজা সবার জন্য উন্মুক্ত।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “সবারই এগিয়ে আসতে হবে এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে। (সকলকে) জনগণের কাছে গিয়ে ভোট চাইতে হবে।”
বিএনপি-জামায়াত বিশেষ করে তাদের দ্বারা সহিংসতা ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে মানুষ হত্যা ও জানমালের ক্ষতি সাধনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাদের (বিএনপি-জামায়াত) উচিত তাদের অপরাধের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া এবং তারপরে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তাদের অংশ গ্রহন করা উচিত।
আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান শেখ হাসিনা অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতাংয় ভয় না পেয়ে নিয়ম মেনে যথাসময়ে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
সময়মতো নির্বাচন যাতে সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয় সেজন্য তিনি দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন।
তিনি বলেন, জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে এবং তাদের পছন্দের সরকার গঠনের জন্যই এ নির্বাচন। ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশী তাকে ভোট দেব- স্লোগান দিয়ে – আপনারা (নির্বাচনে) ভোট দিন।
যুব সমাজের প্রতি ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মান করেছে এবং এখন সবাই এর সুফল পাচ্ছে। এখন তার সরকার আগামীতে দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টায় রয়েছে। “আমরা আশা করি যে, আমরা তাদের (তরুণদের) সহযোগিতা নিয়ে এটি করতে পারব।”
তিনি প্রশ্ন তোলেন, যারা খুন করেছে এবং সাধারণ মানুষকে হত্যার পরিকল্পনা করেছে তাদের ভোট দিতে কেন জনগণ যাবে এবং জনগণ কেন তাদের ওপর আস্থা রাখবে?
তিনি আরো বলেন, জনগণ তাদের বিশ্বাস করে না, কারণ তারা খুনি ও ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে চিহ্নিত।নির্বাচন জনগণের অধিকার এবং এটা তাদের সাংবিধানিক অধিকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় এসেছে এবং জনগণ ভোট দেবে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, জনগণ ভোট দিয়ে যে দলকে নির্বাচিত করবে সেই দলই সরকার গঠন করবে। তিনি বলেন, তারা (বিএনপি-জামায়াত) জনগণের ওপর আস্থা রাখতে ব্যর্থ হয়ে তাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে।
আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও অর্থনৈতিক নীতি নিয়ে দেশ পরিচালনা করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তৃণমূলের জনগণই তার সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনার কেন্দ্রবিন্দু।
তিনি বলেন, ” বিগত ১৫ বছরে আমরা সফলভাবে বাংলাদেশে একটি আমূল পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি আরো বলেন, তার সরকার ২০০৯ সাল থেকে জনগণের সেবা করে জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেছে।
তিনি বলেন, আমরা জনগণের সেবা করেছি ও তাদের অধিকার নিশ্চিত করেছি বলেই আজ আওয়ামী লীগ ও আমাদের ওপর জনগণের আস্থা রয়েছে।
বিএনপি ও জামায়াতের নাম উল্লেখ না করে তিনি এ প্রসঙ্গে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের নিপীড়নের প্রতিবাদ না করায় দলগুলোর সমালোচনা করেন।
তিনি আরও বলেন, “এটা দুর্ভাগ্যজনক যে, আমরা এমন সব পক্ষের কাছ থেকে অনেক কিছুই শুনি যারা এই দেশে অগ্নিসংযোগ করে মানুষ হত্যা করে এবং অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে। এ বিষয়ে তারা কিছুই বলে না।”
বাংলাদেশের রাজনীতির প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, এখন চরম ডানপন্থী ও চরম বামপন্থী দলগুলো তার সরকারকে উৎখাতের জন্য হাত মিলিয়েছে।
আওয়ামী লীগ প্রধান প্রশ্ন করেন, ‘আমাদের কী দোষ যে, আমাদের সরকারের পতন ঘটাতে হবে?
বিএনপি ও তাদের জোট আবারও অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতা শুরু করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আগুন নিয়ে খেলা এ বাংলাদেশের মানুষ কখনোই মেনে নেবে না।
তিনি আরও বলেন, আসলে তারা (বিএনপি) নির্বাচন বানচাল করতে চেয়েছিল। কিন্তু, তারা এই নির্বাচন বানচাল করতে পারবে না।”