আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস-২০২৩ আগামীকাল সোমবার। বিশ্বব্যাপী দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করা হবে। দিবসটি উপলক্ষ্যে সোমবার (২৯ মে) পিসকিপার্স রান-২০২৩ অনুষ্ঠিত হবে।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শহীদ শান্তিরক্ষীদের নিকটাত্মীয় ও আহত শান্তিরক্ষীদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) মনজুর আহমেদ জানান, দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে। বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল এবং বাংলাদেশ বেতারে বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর মানবতার কল্যাণ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকারকে ধারণ করে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ পুলিশের পদযাত্রা শুরু হয় ১৯৮৯ সালে, নামিবিয়া মিশনের মাধ্যমে। সেই থেকে অদ্যাবধি বাংলাদেশ পুলিশের ২১ হাজার ২৮৪ জন শান্তিরক্ষী ২১টি দেশের ২৩টি মিশনে পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন।
মনজুর আহমেদ বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ পুলিশের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা ও অনন্য অবদান রয়েছে, যা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ পুলিশ অঙ্গীকারবদ্ধ।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, মালি, সাইপ্রাস, সাউথ সুদান, সেন্ট্রাল আফ্রিকা, লিবিয়া ও সুদানে সাতটি দেশে বাংলাদেশ পুলিশের ৫১২ জন শান্তিরক্ষী নিয়োজিত রয়েছেন।
২০০০ সাল থেকে বাংলাদেশ পুলিশের নারী পুলিশ কর্মকর্তারা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছেন। বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশের ১৫৭ জন নারী পুলিশ শান্তিরক্ষী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিয়োজিত রয়েছেন। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ পুলিশের ১ হাজার ৭৬৬ জন নারী শান্তিরক্ষী বিভিন্ন শান্তিরক্ষা মিশনে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন সম্পন্ন করেছেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, বাংলাদেশ পুলিশের শান্তিরক্ষীরা নানা প্রতিকূলতার মধ্যে প্রচণ্ড মানসিক শক্তি নিয়ে মানুষকে আপন করে নিয়েছেন, তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। বাংলাদেশ পুলিশ হাইতির ভূমিকম্প বিধ্বস্ত অসহায় মানুষের পাশে থেকে কাজ করেছেন, তেমনি আফ্রিকা এমনকি ইউরোপের বিভিন্ন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে তৃণমূল পর্যায়ে পুলিশের সেবা প্রদান, পুলিশের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো পুনর্বিন্যাস ও পুনর্গঠন এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ পুলিশের ভূমিকা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সমাদৃত হয়েছে।
বাংলাদেশ পুলিশের শান্তিরক্ষীরা দুর্গম ভৌগোলিক পরিবেশ ও প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও প্রচণ্ড মানসিক শক্তি নিয়ে মানবিকতায় উদ্বুদ্ধ হয়ে তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে বিশ্বশান্তি রক্ষায় নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে চলেছে।