ইমা এলিস/বাংলা প্রেস, নিউ ইয়র্ক ::
গত ১৫ বছর ধরে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন চলাকালীন সময়ে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সামনে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতাকর্মীরা যা যা করেছিল এবার তাই করবেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এ জন্য তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে একটি পার্টি হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ।
জাতিসংঘের ৭৯তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে ২২ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে আসছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার আগমনের প্রতিবাদে জেএফকে বিমানবন্দর এবং জাতিসংঘ সদর দফতরের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন। সংবাদ সম্মেলনে ২২ সেপ্টেম্বর রোববার দুপুর ২টায় জেএফকে বিমানবন্দরে এবং ২৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকাল ১১টায় জাতিসংঘের সদর দফতরের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করার কথা জানান।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানের সভাপতিত্বে উক্ত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে এবং ৩০ লাখ শহিদের রক্তে রঞ্জিত অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা। সেই স্বাধীনতাকে অস্বীকার করে শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে অসাংবিধানিক ভাবে জোরপূর্বক অন্তর্বর্তীকালীন দখলদার সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. ইউনূস দেশে নৈরাজ্য ও পৈশাচিক হত্যাকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। গতকালও দেশে (১২ সেপ্টেম্বর) ৫ জনকে গ্রেফতার করে দু’জনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। ড. ইউনূস এ যাবত পাঁচ হাজারের অধিক পুলিশ,ছাত্র, সংখ্যালঘু,সাধারণ মানুষ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী হত্যা এবং আনুমানিক দশ হাজার নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার ও মামলা দায়ের করেছে।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, দেশের জনগণ শান্তিতে বসবাস করতে পারছে না। অনির্বাচিত অবৈধ দখলদার সরকারের দমন নীতি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির কারণে দেশে আইন বিচার বলে কিছুই নেই। পশ্চিমা দেশগুলোর মত ড. মুহাম্মদ ইউনূস জনগণ বিচ্ছিন্ন সর্বোচ্চ ব্যাংক সুদের সফল ব্যবসায়ীদের একজন। দেশ পরিচালনায় কোন ধরনের দক্ষতা তার নেই। নিজেই বলেছেন ছাত্ররা তাকে নিয়োগ দিয়েছেন। তাই স্বাভাবিকভাবে জনগণের নিকট তার কোন দায়বদ্ধতা নেই।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দেশের প্রচলিত নিয়ম আইন ভঙ্গ করে দেশের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে স্কুল শিক্ষকদের ছাত্রদের দ্বারা পদত্যাগে বাধ্য করার ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমুহে অচল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসনের অবস্থা আরও করুণ। ডিসিরা পর্যন্ত সচিবালয়ে ব্যায়াম করা শুরু করেছে। যা স্বাধীনতার ৫৩ বছরে ঘটেনি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের সংবিধান লঙ্ঘন করে জনগণের ম্যান্ডেট না নিয়ে অবৈধভাবে ছাত্রদের নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে অংশগ্রহণ করার যে কোন মানদন্ডে আইনগত বৈধতা নেই। দেশে হাজার হাজার শহিদের রক্তের উপর পা দিয়ে অবৈধ প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে অংশগ্রহণ করা সমীচীন হবে না। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ ও ঘৃণা প্রকাশ করেছি। যদি অবৈধ প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে আসেন তাহলে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও ভাতৃপ্রতিম সংগঠনের সর্বস্তরের নেতৃবৃন্দ ২২ সেপ্টেম্বর রোববার দুপুর ২টায় জেএফকে বিমানবন্দরে এবং ২৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকাল ১১টায় জাতিসংঘের সদর দফতরের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, অবৈধ সরকারের অগণতান্ত্রিক, অসাংবিধানিক, গণহত্যা ও দেশব্যাপী নৈরাজ্য সৃষ্টির বিরুদ্ধে জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
নিউ ইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান মিয়া, নিউ ইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন বাবু, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ নেতা সোলায়মান আলী, আব্দুল হামিদ, আশরাফ উদ্দিন, সাহানারা রহমান, এ কে এম তারিকুল হায়দার চৌধুরী, শাহনাজ মমতাজ, এইচ এম ইকবাল, সৈয়দ কিবরিয়া জামান, প্রকৌশলী বাহার খন্দকার সবুজ, পান্না, খান শওকত, যুবলীগ নেতা সেবুল মিয়া প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।