ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডেস্ক :: তালেবানের ক্ষমতা গ্রহণের দারিদ্র্য ও ক্ষুধায় জর্জরিত আফগানদের জন্য ১০০ কোটি ডলারের বেশি সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে দাতারা। দীর্ঘদিনের যুদ্ধ-সংঘাতে দেশটির অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে। তালেবান দেশের ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই নগদ অর্থের সংকটে পড়েছে আফগানিস্তান।

আন্তর্জাতিক তহবিলে আফগানিস্তানের প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দিয়েছে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, ইন্টারন্যাশনাল মনিটরি ফান্ড এবং ইউএস সেন্ট্রাল ব্যাংক। ফলে চরম সংকটে পড়েছেন আফগানরা।তালেবানের শাসনে আফগান ভূখণ্ডে বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ। এই বিপর্যয় এড়াতে বৈশ্বিক সহায়তার আহ্বান জানিয়ে জেনেভায় সোমবার এক বৈঠকের আয়োজন করা হয়।

দেশটিতে মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলায় ৬০ কোটি মার্কিন ডলারের তহবিল সংগ্রহ করার কথা জানিয়েছে জাতিসংঘ। পশ্চিমা সমর্থিত সরকারের হঠাৎ পতনের কারণে দেশটিতে বিলিয়ন ডলারের সহায়তা বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে জাতিসংঘ পরিচালিত কর্মসূচর উপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেন, আফগানিস্তানে জাতিসংঘ অর্থ সংকটে পড়েছে। এমনকি তারা নিজেদের কর্মীদের বেতনও দিতে পারছেন না। জেনেভার সম্মেলনে জাতিসংঘ মহাসচিব, আন্তর্জাতিক রেড ক্রসের প্রধান এবং জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেইকো মাস ছাড়াও বেশ কিছু দেশের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করছেন। জাতিসংঘ যে তহবিল সংগ্রহ করতে চায় তার তিন ভাগের একভাগ ব্যয় করা হবে জাতিসংঘ পরিচালিত বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির অধীনে।

জাতিসংঘের আহ্বানে পর বিভিন্ন দাতা দেশগুলো সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে সাড়া দিয়েছে। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন দেশ ১০০ কোটি ডলার সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সোমবার জেনেভায় দাতা দেশগুলোর সঙ্গে এক বৈঠকে অ্যান্তনিও গুতেরেস বলেন, জাতিসংঘের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিভিন্ন দেশ কী পরিমাণ অর্থ সহায়তা দেবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।

দাতা দেশগুলোর সঙ্গে সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বক্তব্যে গুতেরেস বলেন, কয়েক দশকের যুদ্ধ, সংঘাত এবং নিরাপত্তাহীনতার পর আফগানরা সম্ভবত সবচেয়ে বিপজ্জনক সময়ের মুখোমুখি হচ্ছেন। এই মুহূর্তে আফগান জনগণের একটি জীবনরেখা প্রয়োজন। গুতেরেস বলেন, এই মুহুর্তে আর্থিক ব্যবস্থা অত্যন্ত সীমিত হয়ে এসেছে যার অর্থ হলো বেশ কিছু মৌলিক অর্থনৈতিক কাজ সম্পন্ন করা যাবে না।

এদিকে তীব্র আর্থিক সংকটে আফগান নাগরিকরা তাদের ঘরের ব্যবহার্য জিনিসপত্রও বেচে দিচ্ছেন। রাজধানী কাবুলের চামান-ই হোজোরি এলাকায় চারটি কার্পেট নিয়ে বিক্রির অপেক্ষায় শুকরুল্লাহ নামের এক আফগান নাগরিক। ওই এলাকায় তার মতো অনেকেই টাকার জন্য নিজেদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র অন্যের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছেন। শত শত মানুষ ফ্রিজ, কুশন, পাখা, বালিশ, কম্বল, রুপার জিনিস, পর্দা, বিছানা, ম্যাট্রেস, রান্নাঘরের জিনিসপত্র, শেলফ বিক্রির চেষ্টা করছেন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here