বাংলাদেশে সুন্দরবন পরিদর্শনে গিয়ে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বলেছেন, সুন্দরবন এবং সমুদ্রে জলদস্যুরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাইলে তাদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার কথা সরকার বিবেচনা করতে পারে।

তবে তিনি বলেছেন, এ বিষয়ে প্রস্তাব আসতে হবে জলদস্যুদের দিক থেকেই।

সাম্প্রতিক সময়ে সুন্দরবন এবং সাগরে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর অভিযান জোরদার করা হলেও জলদস্যুদের তৎপরতা বেড়ে চলেছে এবং ঐ অঞ্চলে মানুষের মধ্যে উদ্বেগ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলেই স্থানীয়দের অনেকেই বলছেন।

মংলা নৌ বন্দরের কাছাকাছি সুন্দরবনের যে অংশ পড়েছে, সেই অঞ্চলে জলদস্যুদের বিরুদ্ধে কোস্টগার্ডের তৎপরতা পরিদর্শন করার সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বলেন জলদস্যুদের বিরুদ্ধে সরকারের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

‘জলদস্যুরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চাইলে তাদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা বা কী ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন, সেটা সরকার বিবেচনা করবে।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন সুন্দরবন এলাকা পরিদর্শনের সময় সাংবাদিকদের একথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার প্রশ্নে জলদস্যুদের পক্ষ থেকেই সেই প্রস্তাব তুলে ধরতে হবে। সেই প্রস্তাব এলে তখনই একমাত্র সরকার তা বিবেচনা করবে।

সাম্প্রতিক সময়ে সুন্দরবনে এবং সাগরে জলদস্যুদের বিরুদ্ধে কোস্টগার্ড, এবং র‍্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর অভিযান জোরদার করা হয়েছে।

গত কয়েকমাসে এই অভিযানে বন্দুকযুদ্ধে জলদস্যুদের হতাহত হওয়ার বেশ কয়েকটি ঘটনার খবর তুলে ধরা হয়েছে।

সুন্দরবনে মাছ ধরেন বা মাছের ব্যবসা করেন এমন জেলেদের অনেকেই বলেছেন, সারা বছর ধরেই অভিযান চলে, কিন্তু তারপরও জলদস্যুদের তৎপরতা থেমে থাকে না।

একজন মাছ ব্যবসায়ী আব্দুর রব হাওলাদার বলছিলেন, জলদস্যুদের অত্যাচার নির্যাতনে তার বাবার মৃত্যু হয়েছে। তিনি নিজেও জলদস্যুদের নির্যাতনের কারণে দু’বছর ধরে মাছের ব্যবসা করতে পারছেন না।

এমন অনেক নির্যাতিত মাছ ব্যবসায়ী সেখানে রয়েছেন। মি: হাওলাদার বলেন চাঁদার জন্য জলদস্যুরা তাদের জিম্মি করে নির্যাতন চালিয়েছিল।

‘যখন অভিযান চলে, সে সময় জলদস্যুরা হয়তো গা ঢাকা দেয়, কিন্তু অভিযান না থাকলেই তারা বেরিয়ে আসে। এধরনের অবস্থাই চলছে সুন্দরবনে,’ বলেন মাছ ব্যবসায়ী আব্দুর রব হাওলাদার।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন অবশ্য দাবি করেছেন, এখন জলদস্যুদের তৎপরতা অনেকটা কমেছে, যদিও একইসাথে তিনি বলেছেন, জলদস্যুদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

কারণ তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেছেন, ‘চাঁদাবাজি করা এবং সেজন্য সাধারণ মানুষকে বা জেলেদের জিম্মি করে জলদস্যুরা যে নির্যাতন করে, তা গ্রহণযোগ্য নয়।’

কিন্তু জলদস্যুদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার যে প্রশ্ন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তুলেছেন, সেই প্রেক্ষাপটে তিনি বলেছেন, জলদস্যুরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার প্রস্তাব দিলে, তখন সরকার অভিযান বন্ধ করা না করার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/ঢাকা

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here