ডেস্ক রিপোর্ট::  বলা হয়েছিল ফাইনালের আগে ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছেন নোভাক জোকোভিচ ও কার্লোস আলকারাজ। সেমিফাইনাল ম্যাচের মাঝপথেই আলকারাজ চোটে পড়ায় সেই উত্তাপ কমে যায়। যদিও তিনি পুরো ম্যাচই খেলেছেন, কিন্তু সেটি জোকোভিচকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো যথেষ্ট ছিল না। ফলে ৬-৩, ৫-৭, ৬-১, ৬-১ জিতে ফ্রেঞ্চ ওপেনের শিরোপা জয়ের পথে এক পা দিয়ে রাখলেন ২২টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতা সার্বিয়ান তারকা।

অথচ অভিজ্ঞতায় পিছিয়ে থাকলেও ২০ বছর বয়সী আলকারাজের সঙ্গে ৩৬ বছর বয়সী জোকোভিচের লড়াইটা জমবে বলে মনে করেছিলেন টেনিস সংশ্লিষ্টরা। তরুণ টেনিস তারকা চোটে না পড়লে সেরকমটা হতেও পারতো। আলকারাজ এখন পর্যন্ত জিতেছেন একটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম।

ম্যাচের শুরুটা হয়েছিল দ্রুতগতিতে। প্রথম দুটি সার্ভ ধরে রেখে জোকোভিচ ২-১ গেমে এগিয়ে যান। এই গেমে জোকোভিচের একটি ক্রসকোর্ট ফোরহ্যান্ড উইনার দেখেই দর্শকরা বুঝতে পারেন, ম্যাচটা উত্তেজক হতে চলেছে। সেটা বোঝা গেল পরের গেমেই। আলকারাজকে ব্রেক করেন জোকোভিচ। কিন্তু ১৪ শটের যে র‌্যালি দেখা গেল, তা শেষ হওয়ার পর কেউই আর নিজের আসনে বসে থাকতে পারলেন না। দুই খেলোয়াড়ের র‌্যাকেট থেকেই বেরোল ড্রপ শট। শেষ হাসি জোকোভিচের।

প্রথম সেট শেষ হতে লাগল ৫৯ মিনিট। দ্বিতীয় সেটে আরও বেশি, ৭৭ মিনিট। অর্থাৎ দু’টি সেট শেষ হতে সময় লাগল প্রায় আড়াই ঘণ্টার কাছাকাছি। প্রতিটি পয়েন্টের জন্যে যেভাবে আলকারাজ লড়াই করছিলেন, যেভাবে অনায়াসে কোর্টজুড়ে ছুটে বেড়াচ্ছিলেন, তাতে ৩৬ বছরের জোকোভিচকে দেখে মনেই হচ্ছিল ম্যাচটা কঠিন হতে চলেছে। কে জানত তৃতীয় সেটে চোট পাবেন আলকারাজ!

ফলে প্রথম দু’টি সেটে যে রকম হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছিল, সেটি আর তৃতীয় সেটে দেখা যায়নি। গোটা কোর্ট দৌড়ানোর কারণে এমনিতেই বাড়তি পরিশ্রম করতে হচ্ছিল আলকারাজকে। তৃতীয় গেমের সময় তার ডান পায়ের পেশিতে টান ধরে। একটি শট রিটার্ন করতে গিয়ে ল্যান্ডিং ঠিক মতো হয়নি। শারীরিক ভাবে কিছুটা বিধ্বস্তও দেখাচ্ছিল। তার পুরোপুরি ফায়দা তুলে নিয়েছেন জোকোভিচ। ব্রেক করলেন স্প্যানিশ তারকাকে। এই সময় গোটা সেট জুড়েই শারীরিকভাবে বেশ অস্বস্তিতে দেখায় আলকারাজকে। জোকোভিচের ৬-১ জয়েই সেটা পরিষ্কার হয়ে ওঠে।

চতুর্থ সেটেও একই চিত্র। আলকারাজ ম্যাচটা ছেড়ে দেবেন কিনা, সেই শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। কারণ যে কোর্ট কভারেজের জন্য তিনি সুখ্যাতি অর্জন করেছেন, সেই আলকারাজকেই দেখা যাচ্ছিল একের পর এক বল ছেড়ে দিতে। বলের ধারেকাছেই পৌঁছাতে পারছিলেন না তিনি। ফলে জোকোভিচের কাছে খেলাটা অনেক সহজ হয়ে যায়। পয়েন্টের জন্যে সেরকম কষ্টই করতে হচ্ছিল না তাকে।

এ নিয়ে সপ্তমবারের মতো ফ্রেঞ্চ ওপেনের ফাইনালে উঠলেন জোকোভিচ। সেই ম্যাচে জিতলে এই সার্বিয়ান তারকা টেনিসে সর্বোচ্চ গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী হবেন। এর মাধ্যমে তিনি ছাড়িয়ে যাবেন যৌথভাবে সর্বোচ্চ গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী রাফায়েল নাদালকে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here