সজল দেব, মৌলভীবাজার:

চা বাগান শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবী আদায় ও শ্রমিক নির্যাতনের প্রতিবাদে ফিনলে টি কোম্পানীর ডিজি এম ও এক সহকারী ব্যবস’াকের অপসারনের দাবীতে মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া শ্রমিক ধর্মঘট বৃহস্পতিবার অব্যাহত রয়েছে। সৃষ্ট জটিলতা নিরসন কল্পে বৃহস্পতিবার উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তা সমাধান হওয়ার  কথা থাকলেও চা বাগান কর্তৃপক্ষ বৈঠকে বসতে রাজি না হওয়ায় সমাধানের বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

এদিকে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ম্যানাজার বাংলো ভাঙ্গচুর ও লুটপাটের অভিযোগ এনে শ্রমিক নেতা পরেশ কালিন্দিকে ১নং আসামী করে ১৩জন শ্রমিকের বিরুদ্ধে শ্রীমঙ্গল থানায় একটি মামলা দায়ের করার ফলে শ্রমিকদের অন্যান্য দাবীর সাথে মামলা প্রত্যাহারের দাবীটিও সংযুক্ত হলো।

এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল উপজেলা চেয়ারম্যান রনধীর কুমার দেব ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশফাকুল হক চৌধুরী সাংবাদিকপদর জানান, চা বাগানের শ্রমিকরা নিত্যান্তই গরীব, তারা মাত্র ৪৮ টাকা দৈনিক হাজিরায় জীবন নির্বাহন করে থাকেন কাজে না গিয়ে ধর্মঘটে যাওয়ায় শ্রমিকদেরই ক্ষতি বেশি হচ্ছে। বিষয়টি বিবেচনা করে বৃহস্পতিবার উভয় পক্ষকে সমঝোতার জন্য উপজেলা পরিষদে ডাকা হয়েছিল। কিন’ শ্রমিকরা আসতে রাজি হলেও চা বাগান কর্তৃপক্ষ সমঝোতা বৈঠকে বসতে রাজি হননি। বিষয়টি আইনানুগভাবে দেখা হবে বলে তারা জানান।

মামলার ১নং আসামী জাগছড়া চা বাগানের শ্রমিক নেতা ও স’ানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য পরেশ কালিন্দি এ প্রতিবেদককে জানান, ডিজি এম ও সহকারী ব্যবস’াকের অপসারন দাবীতে শ্রমিকরা অনঢ়। তাদের অপসারন না হওয়া পর্যন্ত শ্রমিকদের  কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।

উল্লেখ্য, চা শ্রমিকদের ঘর তৈরী, দরজা-জানালা স’াপনের দাবী, সোনাছড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকে লাঞ্চিত করা, বিদ্যালয়ে অবৈধ ভাবে শিক্ষক নিয়োগ, বাগান শ্রমিক বিরবল রবিদাশকে নির্যাতন, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শ্রমিক প্রতিনিধিরা বাগান কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলতে গেলে চা শ্রমিক নেতাদের হয়রানী করার অভিযোগ রয়েছে সহকারী ব্যাবস’াপক গোলাম ফারকের বিরুদ্ধে।

এ অবস’ায় জাগছড়া চা বাগানের শ্রমিক নেতা ও স’ানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য পরেশ কালিন্দিকে পেশা বদল করে জ্বালানী কাঠ কাটায় নিয়োগ দেওয়ায় শ্রমিকদের চাঁপা ক্ষোভ বিক্ষোভে পরিণত হয়। এর ফলে গত মঙ্গলবার সকাল থেকে চা শ্রমিকরা কাজে না গিয়ে জাগছড়া ফ্যাক্টরীর সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে কর্মবিরতি চালিয়ে যায়।

উল্লেখ্য, অতিসম্প্রতি রশিদপুর চা বাগানে শ্রমিক নির্যাতনের কারণে ডিজি এম জাভেদ আশরাফকে বদলী করে জাগছড়া ও সোনাছড়া চা বাগানে প্রেরন করা হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here