ডেস্ক রিপোর্ট:: কোরবানির পশুর চামড়া কিনে সংরক্ষণের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে লালবাগের পোস্তার আড়তদাররা। এই এলাকার ৫৫ জন আড়তদারের পাশাপাশি মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ঢাকায় জবাই হওয়া পশুর ১ থেকে দেড় লাখ চামড়া কেনার পরিকল্পনা করেছেন। এজন্য তারা নিজের পুঁজির পাশাপাশি ধার-দেনা করে শত শত কোটি টাকা জমা রেখেছেন।
মঙ্গলবার (২৭ জুন) রাজধানীর পুরান ঢাকার লালবাগ এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, অধিকাংশ আড়তে ব্লিচিং পাউডার ও পানি দিয়ে ধুয়ে-মুছে কাঁচা চামড়া রাখার জায়গা পরিষ্কার করা হচ্ছে। এজন্য পুরোনো চামড়া সরিয়ে নিয়েছেন তারা। আড়তগুলোতে শত শত লবণের বস্তা সাজিয়ে রাখা হয়েছে। লবণ দেওয়ার জন্য আড়তের ভেতরে ফাঁকা জায়গাও রাখা হয়েছে।
পোস্তার আড়তদার সোলায়মান শেখ বলেন, চামড়া কেনার জন্য আমাদের আড়তে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। আড়ত ডিটারজেন্ট পাউডার দিয়ে পরিষ্কার করা হয়েছে।
তিনি জানান, একসময় দেশের সব চামড়া এখানে আসত। তখন এখানে দুই-তিনশ আড়ত ছিল। তখন এই এলাকা ছিল অত্যন্ত ব্যস্ততম এলাকা। কিন্তু এখন ব্যস্ততা কমেছে।
বর্তমানে এখানে ৫০ থেকে ৬০ জন আড়তদার রয়েছেন। তারা কেবল ঢাকার চামড়াগুলো কিনে লবণজাত করেন। এরপর এখান থেকে সাভারের হেমায়েতপুরে স্থানান্তর করেন বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে আড়তদারদের সংগঠন বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আফতাব খান বলেন, লালবাগের পোস্তায় এখন ২০ শতাংশ কাঁচা চামড়া আসে। আমরা এই চামড়া ঈদের দুই দিনে কিনে লবণযুক্ত করে ট্যানারিতে পাঠাই।
তিনি বলেন, গত বছর আমাদের পোস্তায় কোরবানির চামড়ার ২০ শতাংশ এসেছে। এবারও আমাদের টার্গেট রয়েছে ২০ শতাংশ চামড়া কেনার। সেই হিসেবে ১ লাখ পিস চামড়া কেনার টার্গেট আছে। বেশি চামড়া এলে আমরা আরও বেশি কিনব।
বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব টিপু সুলতান বলেন, এ বছর ট্যানারি মালিকরা আমাদের টাকা দেয়নি। সরকারের কাছ থেকেও ঋণ পায়নি। আমরা অসহায় অবস্থায় আছি।
তিনি বলেন, এবার ৫৫ জন আড়তদার এবং আশপাশের এলাকা থেকে আসা মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ব্যবসায় করবেন। সবাই মিলে কোরবানির ঈদের প্রথম দুই দিনে ঢাকায় জবাই হওয়া এক লাখ থেকে দেড় লাখ পশুর চামড়া কেনা হবে।
প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, এ বছর কোরবানিতে প্রায় এক কোটি পশু জবাই হতে পারে। এর মধ্যে ৫৫ লাখের বেশি গরু আর বাকি পশুর মধ্যে রয়েছে মহিষ, ছাগল, ভেড়া, উট, দুম্বা ইত্যাদি। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ পশুর চামড়া সাভারের হেমায়েতপুর, উত্তরাঞ্চল এবং অন্যান্য এলাকায় কিনে জমা করেন ব্যবসায়ীরা। আর ২০ শতাংশ চামড়া কেনেন পোস্তার আড়তদাররা। তারা লবণযুক্ত করে এক থেকে দেড় মাস পর এই চামড়া ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করেন।