মোঃআশরাফুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি ::
গতকয়েকদিন ধরে বেড়েছে পদ্মা, মহানন্দা ও পুনর্ভবা নদীর পানি। নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে তলিয়ে গেছে ফসলি জমি এবং বন্ধ রয়েছে শিক্ষা কার্যক্রম। তবে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার নিচে আছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার আলাতুলি, শাহজাহানপুর, চরবাগডাঙ্গা, বারঘরিয়া ও শিবগঞ্জ উপজেলার উজিরপুর, পাঁকা, দুলর্ভপুর, ঘোড়াপাখিয়া,ছত্রাজিতপুর, মনাকষা এবং গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর, চৌডালা, রাধানগর, বোয়ালিয়া, বাঙ্গাবাড়ি, আলীনগর ও রহনপুর পৌরসভার ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এই তিনি উপজেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের প্রায় ১ হাজার ৪শ হেক্টর ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে এবং প্রায় ৪ হাজার ৫৮৫ জন কৃষকের মাসকালাই, রোপা আউশ, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ, চিনা, আখসহ সবজি নষ্ট হতে বসেছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) চাঁপাইনবাবগঞ্জের পদ্মা নদীতে ২১ দশমিক ২৫ মিটার পনির স্তর রেকর্ড করা হয়েছে এবং বিপৎসীমা ধরা হয়েছে ২২ দশমিক ০৫ মিটার, মহানন্দা নদীতে ১৯.০৩ স্তার রের্কড করা হয়েছে এবং বিপৎসীমা ধরা হয়েছে ২০.০৫। এছাড়া পূর্ণভর্বা নদীতে পানি বেড়েছে ১৮.৭৯ মিটার এবং বিপৎসীমা ধরা হয়েছে ২১.৫৫।
নারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজির হোসেন জানান, হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধির কারণে চরাঞ্চলের প্রায় ৯৯ ভাগ পরিমাণ জমির মাসকালাই ডুবে যাওয়ায় নষ্ট হতে বসেছে। বেশিদামে মাসকালাই বীজ কিনে বপন করে তা ডুবে যাওয়ায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এছাড়া দারুল হোদা আলিম মাদ্রাসার ক্লাস রুমে পানি প্রবেশ করায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে বলেও জানান তিনি।
তবে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ বলেন, এ বিষয়ে আমরা এখনো কিছু জানি না। খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা নারায়ণপুর ইউনিয়নের কৃষক জসীম উদ্দীন বলেন, ১০ থেকে ১৫ দিন আগে ২০ বিঘা জমিতে মাসকলাই বীজ বুনেছিলাম। হঠ্যাৎ করে পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমার সব জমির মাসকালাই ডুবে গেছে। কয়েকদিনের মধ্যে যদি পানি না নামে, তাহলে আমি অনেক তিগ্রস্ত হবো।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ড. পলাশ সরকার জানান, পদ্মার পানি বৃদ্ধির কারণে সদর উপজেলায় ২১২ হেক্টর, শিবগঞ্জ উপজেলায় ১০৮২ হেক্টর এবং গোমস্তাপুর উপজেলায় ৬০ হেক্টরসহ মোট ১৩৫৪ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আশা করি কিছুদিনের মধ্যে এই পানি কমে যাবে এবং কৃষকরা অনেকটাই রিকভারি করতে পারবে। এছাড়া আমরা কৃষকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি এবং তাদের সব ধরণের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
এছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম আহসান হাবীব বলেন, গত কয়েকদিন ধরে পদ্মা ও মহানন্দা নদীতে পানি বাড়ছে, তবে তা এখনো বিপৎসীমার নিচে আছে। জেলার নিমাঞ্চলের আবাদি জমিগুলো পানিতে ডুবে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামীকাল ও পরশুর মধ্যে পানি কমতে শুরু করবে।