এ কে এম শাহেদ, চাঁদপুর
চাঁদপুরে হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিএনপি ও পুলিশের সংঘর্ষের সময় গুলি না চালালে আরো লাশ পড়ত বলে দাবি করেন চট্টগ্রামের ডিআইজি বিশ্বাস আফজাল হোসেন। দুদিনের তদন- শেষে বৃহসপতিবার রাতে চাঁদপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন। তার সঙ্গে ছিলেন তদন- কমিটির অপর সদস্য চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা।
আফজাল হোসেন বলেন, ওইদিন গণমিছিলের নামে প্রস’ত হয়ে যুবদলের দু- গ্রুপ শক্তি প্রদর্শন করে। এ সময় পরিসি’তি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি করে ছত্রভঙ্গ করা হয়। তবে কে, কেন, কার নির্দেশে এবং কী পরিসি’তিতে গুলি করা হয় তার তদন- এখনো শেষ হয়নি।
তিনি জানান, প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক, শিক্ষক, অভিভাবক, দোকানদার, সিএনজি চালক, চিসিৎসকসহ প্রায় ৫০ জনের সঙ্গে তারা কথা বলেছেন এবং বিভিন্ন আলামত ও ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছেন। সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন- প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেবে এই তদন- দল।
এ ঘটনায় ম্যাজিস্ট্রেট শামীমুল হক পাভেলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রসঙ্গে আফজাল হোসেন বলেন, তিনি এখন ঢাকায়। প্রাথমিকভাবে ঘটনার দিন দায়িত্বরত পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে পুলিশ গুলি চালিয়েছে। তবে এ ঘটনায় পুলিশের দোষ পাওয়া গেলে বিভাগীয় মামলাসহ শাসি-মূলক ব্যবস’া নেওয়া হবে। তবে এ ঘটনায় পুলিশের দোষ পাওয়া গেলে বিভাগীয় মামলাসহ শাসি-মূলক ব্যবস’া নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে ম্যাজিস্ট্রেট শামীমুল হক পাভেল বলেন, “আমি গুলি হওয়ার পর ঘটনাস’লে গিয়েছি। তবে আমার বিরুদ্ধে যেসব কথা বলা হচ্ছে তা আদালতেই প্রটেস্ট করবো।” বিএনপি ও পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় ২৯ জানুয়ারি করা পুলিশের মামলায় বিএনপি ও জামায়াতের ৪৯ নেতাকর্মীকে জামিন দিয়েছে হাইকোর্ট। বৃহসপতিবার বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল হাসানের বেঞ্চ এই জামিন মঞ্জুর করে। তাদের চাঁদপুর মুখ্য বিচার বিভাগীয় হাকিম আদালতে হাজির হয়ে জামিননামা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
জেলা বিএনপি সভাপতি মমিনুল হক, সাধারণ সমপাদক শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক আদালতে উপসি’ত থেকে দলীয় নেতা-কর্মীদের জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। অপর ১০ আসামিদের মধ্যে দুজন ঘটনারদিন নিহত হন। বাকি আটজন ঘটনার দিন (২৯ জানুয়ারি) আটক হয়ে বর্তমানে চাঁদপুর জেল হাজতে রয়েছেন। চাঁদপুর মডেল থানার ওসি (তদন-) মো. আলমগীর হোসেন মজুমদার বাদী হয়ে বিস্ফোরক ও অসি’তিশীল পরিসি’তি সৃষ্টির অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। গুলিতে নিহত লিমন, আবুল হোসেন মৃধা এবং বিএনপি-জামায়াতের ৫৯ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পাঁচ হাজার জনকে মামলায় আসামি করা হয়।
এদিকে নিহত আবুল হোসেনের স্ত্রী ফাতেমা বেগম মনি বাদী হয়ে বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি ) চাঁদপুরের আদালতে ৪৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতসহ ১৯৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এতে ওইদিনের ঘটনায় দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ সদস্যদের নাম উল্লেখ করা হয়। নিহত আবুল হোসেন মৃধা চাঁদপুর পৌরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য ও লিমন ছৈয়াল পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি ছিল বলে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে।