তীব্র শীত শৈত্য প্রবাহ আর হিমেল হাওয়াকে উপেক্ষা করে শস্য ভান্ডার খ্যাত চলনবিলের কৃষকরা বোরো ধান রোপন করতে ব্যস্ত হয়ে পরেছে। প্রতি বছর বোরো মৌসুমে চলনবিলে হাজার হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়। তবে এ বছর তীব্র শীতে অনেক কৃষকের বীজতলা নষ্ঠ হয়ে যাওয়ায় চারা বীজ সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। শীতের কারণে শ্রমিকের পারিশ্রমিকও বেশী বলে কৃষকরা জানিয়েছে। চলনবিল ঘুরে কৃষকের সাথে কথা বলে জানাযায়, শস্য ভান্ডার খ্যাত চলনবিলের তাড়শ, রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর, চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, গুরুদাসপুর, সিংড়া, আত্রাই ও রানীনগর উপজেলায় চলতি বছরে প্রায় ১শ’ ৭৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে। চলবিলের কৃষকরা এ সব জমিতে ২বার বোরো ধান রোপন করে। পৌষ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে আগাম জাতের বোরো ধান রোপন শুরু হয় এবং সরিষার ঘরে তোলার পর নাবী জাতে বোরো ধান রোপন শুরু করে পৌষ মাসের শেষে এবং মধ্য মাঘ মাস পর্যন্ত। বিশেষ করে এ সময়ে বেশী কৃষক বোরো ধান রোপন করতে ব্যস্ত সময় পার করছে। বোরো ধান রোপন করতে গিয়ে কৃষকরা চারাবীজ সংকটে পরেছে। তীব্র শীতের কারণে অনেক কৃষকের বীজতলা নষ্ঠ হয়ে গেছে। আবার শীতের মধ্যে লাগানো ধান লাল হয়ে মরে যাচ্ছে। সিংড়া উপজেলার ডাহিয়া গ্রামের কৃষক আসাদুল জানান, আগাম জাতের বোরো ধান লাগানোর পর শীতের কারণে অনেক ধান গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। অনেকেই লাগানো জমি নষ্ট করে দিয়ে পূর্ণরায় ধান লাগানো শুরু করেছে। গুরুদাসপুর উপজেলার রুহাই গ্রামের কৃষক আব্দুল আজিজ বলেন মাঠে প্রচুর পরিমানে সরিষার আবাদ হওয়াতে আমরা প্রতি বছর পৌষ মাসের শেষে এবং মাঘ মাসের প্রথমে বোরো ধান রোপন করে থাকি। তবে এ বছর প্রচুর শীত থাকায় বোর ধান লাগাতে এবং বীজ সংকটে পরেছি। তাড়াশ উপজেলার পতিরামপুর গ্রামের কৃষক হায়দার আলী জানান, চলনবিলের মাটি খাটি সোনার চেয়ে খাটি। কারণ হিসেবে তিনি বলেন বোরো ধান, সরিষা এবং প্রচুর পরিমানে ভূট্টার আবাদ হয়েছে এ বছর। ধানের চেয়ে ভূট্টার দিকে মানুষের দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে। ভুট্রার আবাদে তুলনা মূলক খরচ কম থাকায় দিন দিন এর ব্যাপকতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ধাপতেতুলিয়া গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন বলেন, এ বছর ইউরিয়া সার ও ডিজেলের দাম গত বছরের চেয়ে বেশী কিন্তু ধানের দাম কম হওয়াতে কৃষক শংকিত হয়ে পরেছে। কৃষক আব্দুল খালেক জানান, তেল ও সারের দাম কম হলে কৃষক বেশী উপকৃত হবে। চলতি বছরে চলনবিলে প্রাকৃতিক কোন বিপর্যয় না ঘটলে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হবে। কৃষক আশা করছে লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশী ধান চলনবিলে উৎপাদন হবে। তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসার মিজানুর রহমান জানান, তীব্র শীতের কারণে বোরো ধান লাল হলেও ভয়ের কিছুই নেই। আমরা শীতের হাত থেকে রোপন কৃত ধানের জমিতে প্রতিদিন সকালে ঠান্ডা পানি বের করে দিয়ে শ্যালো মেশিন দিয়ে নতুন পানি দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া কৃষি অফিস থেকে কৃষককে সব ধরণের সাহাষ্য সহযোগিতা করার কথা তিনি বলে। (ছবিসহ)
ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/সুজন সরকার/সিরাজগঞ্জ