মহানন্দ অধিকারী মিন্টু, পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি :: ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে ল-ভ- খুলনার পাইকগাছায় প্রায় এক শত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। উপকূলীয় এলাকার মানুষ উদ্বেগ, উৎকন্ঠার মধ্যে গত শনিবার (৯নভেম্বর) নির্ঘুম রাত কাটিয়িছে।
রবিবার সকালে (১০ নভেম্বর) বুলবুল আঘাত হানে জেলার ২ লাখ ৯৭ হাজার মানুষের ওপর। আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে ৪৮ হাজার পরিবার। ক্ষতিগ্রস্তদের পুণর্বাসনে জেলা প্রশাসন বেশি ক্ষতিগ্রস্ত কয়রা, দাকোপ, বটিয়াঘাটা, পাইকগাছা ও রূপসা উপজেলায় ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ করেছে। যা মাথাপিছু তিন টাকারও কম। চাল বরাদ্দ করলেও এখনো ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে তা পৌঁছায়নি।
স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, জনপ্রতিনিধি ও সমাজ কর্মীদের আপ্রাণ চেষ্টায় হাজার-হাজার নারী-পুরুষ, শিশু ও বৃদ্ধ সাইক্লোন শেল্টার, স্কুল কলেজ ও নিরাপদ স্থানে রাত্রি যাপন করে। উপজেলায় কোথায় বেড়িবাঁধ ভাঙার খবর পাওয়া যায়নি। তবে বসতবাড়ী, মাঠের ফসল সহ ল-ভ- হয়েছে চিংড়ি ঘের। পাঁচ দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত শত ভাগ বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন স্বাভাবিক হয়নি।
ত্রাণ পুণর্বাসনের সূত্র জানিয়েছেন, পাইকগাছায় দেড় লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া ২৫ মেট্টিক টন চাল, ২শ’ প্যাকেট খাবার বরাদ্দ করা হয়েছে।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা পবিত্র কুমার দাশ জানান, ৫ হাজার ১শ হেক্টর আয়তনের ১ হাজার ১শ ৮৫টি চিংড়ী ও সাদা মাছের ঘের প্লাবিত হয়ে ৫৭ কোটি টাকার মৎস্য সম্পদের ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এএইচএম জাহাঙ্গীর আলম জানান, চলতি মৌসুমে ১৬ হাজার ৯৬৫ হেক্টরের আমন ক্ষেতের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে ২ হাজার ৭ শ হেক্টর আমন ধান, সবজি ৫৬ হেক্টর ও ৯ হেক্টর পান ক্ষেত আক্রান্ত হয়েছে।
ইউপি চেয়েরম্যানদের মাধ্যমে ক্ষয়-ক্ষতির নিরূপনের কথা বলে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস বলেন, ঝড়ে ১ হাজার ৫২০ আধাপাকা ঘরবাড়ী বিধ্বস্ত ও ৬ হাজারের উপর ঘরবাড়ী আংশিক ক্ষতি হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী মো. ফরিদ উদ্দীন জানান, জলোচ্ছ্বাসের পরিমান কম থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ সুরক্ষিত রয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুণর্বাসন কর্মকর্তা আজিজুল হক জোয়ার্দ্দারের জানিয়েছেন, জিআর’র টাকা ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। অপর সূত্র জানান, চাল এখনো পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে পৌঁছেনি। ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে আগামী সপ্তাহে চাল বিতরণ করা হবে।