
জহিরুল ইসলাম শিবলু, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি :: ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে লক্ষ্মীপুরে বর্ষণ চলছেই। কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি কখনো বা মুষলধারে আবার কখনো থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির সঙ্গে বয়ে চলেছে দমকা হাওয়া। ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে লক্ষ্মীপুরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয় মঙ্গলবার রাত থেকে। লক্ষ্মীপুরে ওপর দিয়ে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় আম্ফান অতিক্রম করার সময় বড় দুর্যোগ হলে কী অবস্থা দাঁড়াবে তা নিয়ে এখনই নানান শঙ্কা ও উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে।
এরই মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে মেঘনা নদীর জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে চার থেকে পাঁচ ফুট বেড়ে গেছে। এতে মেঘনা উপকূলীয় অঞ্চল লক্ষ্মীপুরের কমলনগর ও রামগতি উপজেলার নিম্নাঞ্চলীয় এলাকাগুলো প্লাবিত হয়ে পড়েছে। জোয়ারের পানিতে বন্দি হয়ে পড়েছেন ওই সব এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে রবি ফসলের ক্ষেত।
স্থানীয়রা জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে বুধবার দুপুর থেকে মেঘনার জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বাড়তে থাকে। জোয়ার স্বাভাবিকের চেয়ে চার থেকে পাঁচ ফুট বেড়ে মেঘনা নদীর তীরবর্তী কমলনগর এবং রামগতি উপজেলার নিম্নাঞ্চলীয় এলাকাগুলো পানির নিচে তলিয়ে যায়। এতে ওই সব এলাকার বাসিন্দারা পানিবন্দি হয়ে পড়াসহ রবি ফসলের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যায়। মেঘনার ভাঙনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ায় সহজেই জোয়ারের পানি ঢুকে এলাকাগুলো প্লাবিত হয় বলে স্থানীয়রা জানান।
রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল মোমিন জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে সৃষ্ট ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষার জন্য মেঘনা তীরবর্তী এলাকার মানুষদেরকে আশ্রয়ন কেন্দ্রে নিয়ে আসা হচ্ছে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছেন বলে জানান তিনি।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় আম্ফান মোকাবিলায় এরইমধ্যে লক্ষ্মীপুরে সতর্কাবস্থায় রয়েছে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসন। ঝড়-বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’ প্রতিরোধে জেলায় ২০০টি আশ্রয়ন কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এছাড়া ঘূর্ণিঝড়কালীন ও পরবর্তী স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে ৬৬টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়কালীন ও পরবর্তী সময়ে সকল প্রকার সেবার জন্য জেলায় ০১৭৩৫০০৩৫৫৫, ০১৮১৯৫২৪৮০২ হটলাইন নম্বর ২৪ ঘন্টা চালু রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’ প্রতিরোধে পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ রয়েছে বলেও জানান তিনি।