একাত্তরে যুদ্ধকালীন অপরাধের অভিযোগে করা মামলায় গ্রেফতার জামায়াতের সাবেক আমীর গোলাম আযমকে কারা হেফাজতে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বুধবার দুপুর ১২টার দিকে প্রিজন ভ্যানে করে তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে তাঁকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) প্রিজন সেলে নেওয়া হয়।
কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি নিজস্ব এম্বুলেন্স তাকে নিয়ে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে রওয়ানা হয়। বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে এম্বুলেন্সটি বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিজন সেলের সামনে পৌঁছে।  পথে এম্বুলেন্সটির সামনে পুলিশ ও পেছনে র‌্যাবের কড়া পাহারা ছিলো।

এম্বুলেন্সটি প্রিজন সেলের কাছে পৌছার পর ফটোগ্রাফাররা ছবি তুলতে গেলে বাধা দেয় পুলিশ। এ সময় কয়েক মিনিট এম্বুলেন্সেই রাখা হয় গোলাম আযমকে। এ পরিস্থিতিতে গোলাম আযমকে কার্ডিয়াক বিভাগের ১০২ নম্বর কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। নিরাপত্তা জোরদার করে তাকে প্রিজন সেলে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সকালে গোলাম আযমের জামিন আবেদন খারিজ করে নিজামুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি তার অভিযোগ গঠনের শুনানি হবে। সেদিন গোলাম আযমকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। এর আগে সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে তাঁর আইনজীবী আবদুর রাজ্জাকের সঙ্গে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে আসেন গোলাম আযম। এরপর তাকে হুইল চেয়ারে করে হাজতখানায় নেওয়া হয়।

সকাল সাড়ে ১০টায় দিকে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু হলে তাকে হাজির করা হয়। পরে গোলাম আযমের জামিন আবেদনের ওপর শুনানি শুরু করেন তার আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। মঙ্গলবার সকালে এই জামিন আবেদন করেন গোলাম আযমের আরেক আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম। আবেদনে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা ও স্বাস্থ্যগত কারণ উল্লেখ করা হয়।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সোমবার গোলাম আযমের বিরুদ্ধে একাত্তরে যুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আমলে নেন এবং তাকে বুধবার হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। আদেশে ট্রাইব্যুনাল বলেন, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে হাজির না হলে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হবে।

গত ১২ ডিসেম্বর প্রথম দফায় ৫২ দফা অভিযোগ উত্থাপন করে গোলাম আযমকে গ্রেপ্তারের আবেদন জানায় ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন। ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে তা পুনর্বিন্যস্ত করে ৫ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার তীব্র বিরোধিতাকারী গোলাম আযম ১৯৭১ সালে শান্তি কমিটি, রাজাকার ও আলবদর বাহিনী গঠনে নেতৃত্ব দেন, যাদের সহযোগিতা নিয়ে পাকিস্তানি সেনারা বাংলাদেশে ব্যাপক হত্যা ও নির্যাতন চালায়। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর আমীর গোলাম আযম সে সময় বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার জন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতেও প্রকাশ্যে তদবির চালিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ১৯৭১ থেকে ৭ বছর লন্ডনে অবস্থান করার পর ১৯৭৮ এ সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আমলে আবার বাংলাদেশে আসেন তিনি।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/স্টাফ রিপোর্টার

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here