বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও শনিবার পালিত হয়েছে মানবাধিকার দিবস। এই দিনটিতে বাংলাদেশে এবারে বিশেষ করে দৃষ্টি দেয়া হয়েছে হঠাৎ করে গুম হওয়া ব্যক্তিদের খুনের ঘটনার দিকে।
মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, ক্রসফায়ার নিয়ে সমালোচনার মুখে সম্প্রতি এ ধরনের ঘটনা বেড়েছে এবং বিষয়টিতে তাঁরা উদ্বিগ্ন।
নিখোঁজদের স্বজনরা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুললেও তাদের পক্ষ থেকে অভিযোগ অস্বীকার করা হচ্ছে।
দুই মাস এগার দিন আগে নিখোঁজ হয়েছেন ঝরণা খানমের স্বামী কে এম শামীম আখতার। ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক এই নেতা একসময়ে খুলনা এলাকায় রাজনীতি করতেন।
ঢাকার পুরানা পল্টন লাইন এলাকায় তাঁর বাসার সামনের রাস্তায় নিজের বাচ্চা ও শাশুড়িকে রিকশায় তুলে দেওয়ার পর তাকে তুলে নেয় অজ্ঞাত-পরিচয় ব্যক্তিরা।
ঝরণা খানম ঘটনা সম্পর্কে বলেন, সাদা রংয়ের একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের জানানো হয় যে তাঁরা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য।
তিনি বলেন, “এখনো পর্যন্ত আমরা জানি না যে আমার স্বামী বেঁচে আছেন কি না, কিংবা তাকে আমরা ফেরত পাবো কি না। আমরা খুবই অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি।“
শামীম আখতারের খোঁজ এখনো না পাওয়া গেলেও সম্প্রতি নিখোঁজ হয়েছেন এমন অনেকের সন্ধান মাঝেমধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। তবে জীবিত নয়, তাদের মরদেহের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে।
শীর্ষস্থানীয় মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের পরিসংখ্যানে বলা হচ্ছে, চলতি বছরের নভেম্বর মাস পর্যন্ত গুপ্ত হত্যার শিকার হয়েছেন অন্ততঃ বাইশ জন, গত বছর যে সংখ্যা ছিল আঠার।
অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান বলেন, গুপ্ত হত্যার ঘটনা যে বাড়ছে, সেটাই উদ্বেগের বিষয়।
তিনি বলেন, গত ৪০ বছরে কোন সরকারের সময়েই বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি ভালো ছিল না। বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন – এসব চলেছে।
মিঃ খানের মতে, ধরে নিয়ে মেরে ফেলা বা ক্রসফায়ারের ব্যাপারে সমালোচনা বাড়ার পর এভাবে গুম করে হত্যার মাধ্যমে বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড আবার শুরু হলো।
ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/ইউএন নিউজ