আনোয়ার হোসেন, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি ::
গুইমারা উপজেলার ২ নং হাফছড়ি ইউনিয়নের ৬নং বড়পিলাক এলাকায় বাজারের  জন্য দানকৃত ২.০০(দুই একর) জমি প্লট বরাদ্ধের নামে বিক্রি করে ২ কোটি ১৬ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও অনিয়ম ও দুর্ণীতির প্রতিবাদে খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার।
মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গুইমারা উপজেলার ২নং হাফছড়ি ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার সানাউল্লার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন,আনোয়ার হোসেন, বাবুল মিয়া ও সফিকুল ইসলাম। এছাড়াও প্লট কিনে প্রতারিত হওয়া মোক্তার আলী মুসুল্লি ও ইসমাইল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, গুইমারা উপজেলার ২নং হাফছড়ি ইউনিয়নের ৬ নং বড়পিলাক এলাকার মানুষের জীবন মান উন্নয়নের জন্য ২০১৮ সালে জনৈক হারিছ মিয়া তার মালিকাধীন ৫ একর ভুমির  ১৫২ নং হোল্ডিং এর অন্দর হতে ২ (দুই) একর ভুমি বড়পিলাক বাজার সৃজনকল্পে ০৩/০৯/২০১৮ সালে খাগড়াছড়ি বাজার ফান্ডের অনুকুলে ২৫০৫ নং দাগের আংশিক দান করে দেন। যার দলিল নং ২৮৪/১৮।
বাজারের অনুকুলে ২ একর জমি দান রেজিস্ট্রির পর থেকে ২নং হাফছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নং ওয়াড সদস্য সানাউল্ল্যাহ এলাকার সহজ সরল মানুষকে বিভ্রান্ত করে প্লট বরাদ্দের নামে প্রতি জনের কাছ থেকে রিসিটের মাধ্যমে ১,০০,০০০/—(এক লক্ষ) টাকা হারে ২১৬ (দুইশত ষোল) জনের কাছ থেকে ২,১৬,০০,০০০/— দুই কোটি ষোল লাখ টাকা আদায় করে। বর্তমানে প্লট রেজিস্ট্রি করে  কবুলিয়ত দিবে বলে আরও অতিরিক্ত লিগ্যাল নোটিশের মাধ্যমে ২০,০০০/— বিশ হাজার টাকা করে চাদাঁ দাবি করে আসছে।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, আনোয়ার হোসেন এর অ মরহুম পিতার উদ্ধেশ্য ছিল বড়পিলাক এলাকায় একটি বাজার সৃষ্ঠি হলে এলাকার জীবন মানের উন্নয়ন হবে। বাজার ফান্ড প্রবিধান ১৯৯০ এর বিধান মোতাবেক সমুদয় টাকা সরকারি কোষ্গারে জমা হবে। কিন্তু ২ একর দানে জনমানুষের উন্নয়নতো দুরে থাক ব্যক্তি স্বার্থ হসিল ছাড়া  কিছুই পুরন হয়নি। বর্তমানেও সানাউল্ল্যাহ বিভিন্ন জনের কাছে প্লট বরাদ্দ দিবে বলে টাকা আদায় করছেন। বাজারের প্লট নিয়ে অনিয়ম করায় প্লট ক্রেতাগণ ২নং হাফছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নং ওয়াড সদস্য সানাউল্ল্যাহ’র বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিকার চেয়ে মামলা করেছেন।  যার নং সিআর ৩৫৩/২১ ও সিআর ৮৬/২২।
সিনিয়র জুডিমিয়াল ম্যাজিট্রেড আদালত খাগড়াছড়িতে জনৈক ইসমাইল হোসেন কতৃত দায়েরকৃত সি আর নং ৩৫৩ /২১ এ মামলার সাফাই সাক্ষী প্রদানকালে অভিযুক্ত সানাউল্্যাহ আদালতকে অবহিত করেছেন যে, ১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা জনগনের কাছ থেকে প্লট বরাদ্ধের নামে আদায় করেছেন বলে স্বীকার করেছেন।  এর অংশ থেকে ১ কোটি ৯ লক্ষ টাকা খাগড়াছড়ি বাজার ফান্ড প্রশাসকের অফিস ম্যানেজ ও  রেজিস্টেশনসহ উপজাতি গোস্টিসহ বিভিন্ন খাতে ঘুস হিসাবে ব্যয় করা হয়। জনৈক মোক্তার হোসের মুসলিরস্ন  দায়ের করা ৮৬/২২ এর সাফাই স্বাক্ষী প্রদান কালে আদালতের স্বীকার করেন বিভিন্নজনের কাছ থেকে ১ কোটি ৬০ থেকে ৭০ লক্ষ টাকা আদায় করেছেন। আদায়কৃত টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন।
বতমানে মামলা দুটি আদালতে চলমান আছে। জানা যায়, বিগত ইউপি নিবাচনে হলফনামাই তিনি উল্লেখ করেছেন যে, তার নামে ৯ একর জমি রেকডভুক্ত আছে। কিন্তু এ সম্পত্তি ক্রয়ের কোন উৎসের কথা তিনি হলফনামাই উল্লেখ করেননি। অভিযুক্ত সানাউল্লাহ একজন আদালত থেকে সাজাপ্রাপ্ত আসামী । নিবাচনি হলফ নামাই তিনি এ তথ্য গোপন করে হলফনামা দাখিল করেছিলেন। পাশাপাশি সে আনসার ভিডিপির এপিসি হিসেবে সরকারি ভাতা গ্রহন করছেন। তিনি বড়পিলাক ৭ নং ভিডিপি প্লাটুনের এপিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ও বেতন উত্তোলন করছেন। একই সাথে ৬ নং বড়পিলাক ওয়াড সদস্য হিসেবেও সরকারি ভাতা নিচ্ছেন।
বাজার ফান্ড প্রবিধান মালার ২৭ ধারায় সু—স্পস্ঠভাবে উল্লেখ আছে যে, কেউ যদি বাজারের টাকা দুর্ণীতি করিয়া আত্মসাৎ করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করিতে হবে। এবং সরকারকে অবহিত করাইতে হবে।  কিন্তু সু—স্পস্ঠ আইন ও প্রমান থাকা সত্তেও বাজার ফান্ড প্রশাসক অভিযুক্ত সানাউল্ল্যাহ’র বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছেনা। অভিযুক্ত সানাউল্লাহ বাজারের ভুমি দাতাও না, বাজার ফান্ড  প্রশাসকের নিযক্ত কোন ব্যক্তিও না। অথচ বাজারের সকল সুবিধা সে একাই ভোগ করিতেছে পৈতৃক সম্পত্তি হিসাবে।
সানাউল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়, বড়পিলাক বাজারের জন্য ২ একর দান করলেও অভিযুক্ত সানাউল্লাহ ৪ একর ভুমি দখল করার অপচেষ্ঠা করছে। অভিযোগের ব্যপারে অভিযুক্ত সানাউল্লাহর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here