লিবিয়ায় কারাগারে আটক কর্নেল গাদ্দাফির সমর্থকদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে বিবিসি আরো কিছু তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে৻
মিসরাটায় সামরিক বাহিনীর একটি স্থাপনায় বন্দীরা অভিযোগ করছেন যে তাদেরকে বেদম প্রহার করা হয়েছে, চাবুক মারা হয়েছে, দেওয়া হয়েছে বৈদ্যুতক শক৻
মিসরাটায় সামরিক পরিষদের প্রধান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন৻
কারাবন্দীদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে সুস্থ করে তোলার লক্ষ্যে তাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হচ্ছে- এই অভিযোগে চিকিৎসকদের আন্তর্জাতিক সংগঠন মেডসা স্য ফ্রতিয়ের মিসরাটায় তাদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার কাজ আপাতত বন্ধ করে দিয়েছে৻খবর : বিবিসি
মিসরাটা শহরে একটি বন্দী শিবিরের সামনের ফটকে লিবিয়ার বিপ্লবী রঙ লাগানো- লাল, কালো এবং সবুজ৻
কিন্তু নতুন এই পতাকার পেছনে আছে আগের সরকারের আমলের অন্ধকার কিছু ছবি৻
এ ধরনের নির্যাতনের চিত্র যারা তুলে ধরেছেন তারা তাদের নাম পরিচয় গোপন রাখতে অনুরোধ করেছেন৻
একজন বলেছেন যে তার মুখ আগুন নেভানোর যন্ত্র থেকে বের হওয়া ফোম দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছিলো, তারপর তাকে দেওয়া হয়েছিলো বৈদ্যুতিক শকও৻
এছাড়াও আরো অনেকে অভিযোগ করেছেন বিদ্যুতের তার দিয়ে তাদেরকে চাবুক মারা হয়েছে, বেধড়ক পেটানো হয়েছে৻
একজন ব্যক্তি বলছেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে তাকে ন্যাশনাল আর্মি ব্যবহার করে এরকম একটি জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো৻
‘তারা যখন আমাকে নিয়ে তখনই আমার পায়ের অবস্থা ছিলো খুব খারাপ৻ জিজ্ঞাসাবাদের সময় তারা আমার পায়ে পেটাতে থাকলো৻ তারপর পাটা ফুলে গেলো৻‘ বললেন তিনি৻
এই বন্দীশালাগুলো যারা পরিচালনা করেন তারাও বলেছেন যে, কিছু কিছু কারাবন্দীকে নির্যাতনের জন্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে তারা জানতেন৻ কিন্তু এই নির্যাতন বন্ধ করার মতো ক্ষমতা তাদের ছিলো না৻
কেউ কেউ বলছেন, মিসরাটায় খোদ ন্যাশনাল আর্মির সদর দপ্তরেও এ ধরনের নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে৻
কিন্তু মিসরাটায় সামরিক পরিষদের প্রধান ইব্রাহিম বাইতেলমাল এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন৻
তিনি বলেছেন, গাদ্দাফির অনুগতরা মানবাধিকার সংস্থা ও চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্সের আড়ালে এসব কাজের সাথে জড়িত৻
‘কিছু কিছু ঘটনা আছে যেখানে সাবেক বিদ্রোহীরা হয়তো প্রতিশোধ নিয়ে থাকতে পারেন৻ কিন্তু তার অর্থ এই না যে কারাবন্দীদের নির্যাতনের জন্যে আমার অফিস থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৻‘ বলেন তিনি৻
জাতিসংঘের হিসেবে সারাদেশের বন্দীশালায় কর্নেল গাদ্দাফির সমর্থক হওয়ার অভিযোগে আটক আছে সাড়ে আট হাজারের মতো মানুষ৻
এসব বন্দীশালার বেশিরভাগই নিয়ন্ত্রিত হয় স্থানীয় মিলিশিয়া অথবা সাবেক বিদ্রোহীদের কোনো গ্রুপের মাধ্যমে৻
সরকার চেষ্টা করে যাচ্ছে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে কিন্তু একজন কারাবন্দী যেমনটা বলেছেন, ‘বন্দুক যার হাতে তার হাতেই ক্ষমতা,‘ লিবিয়ার পরিস্থিতি অনেকটা সেরকমই৻
ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/আন্তর্জাতিক ডেস্ক