গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বহেরারচালা এলাকার কেএসএস পোশাক কারখানায় বকেয়া বেতনের দাবিতে ১০ দিন ধরে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। বকেয়া বেতন পরিশোধের একাধিক তারিখ দিয়ে মালিকপক্ষ অবশেষে কারখানা ছেড়ে পালিয়েছেন। গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা করেন। এ সময় শিল্প পুলিশ ও শ্রীপুর থানা পুলিশ বেতন আদায়ের চেষ্টার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁদের আন্দোলন থেকে নিবৃত করেন। তবে এ চেষ্টায় মালিকের নির্ভরযোগ্য প্রতিনিধি না থাকায় প্রতিশ্রুতির ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারছে না বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা।

শ্রমিকেরা জানান, কারখানাটিতে প্রতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে বেতন পরিশোধের নিয়ম থাকলেও কোনো মাসেই নির্ধারিত সময়ে কর্তৃপক্ষ বেতন পরিশোধ করেন না। নির্ধারিত সময় থেকে ১৫ দিন পর বেতন দেওয়া হয়। চাকরির বয়স দুই বছরের বেশি সময় হলেও চাকরি ছেড়ে চলে গেলে কোনো বকেয়া পরিশোধ করা হয় না। অসুস্থতার কারণে এক দিন অনুপস্থিত থাকলে বেতন না দিয়ে শ্রমিককে চাকরিচ্যুতির কাগজ ধরিয়ে দেওয়া হয়। বকেয়া বেতন চাওয়া ও অনিয়মের প্রতিবাদ করলে নিশ্চিত চাকরিচ্যুতির ভয়ে কেউ মুখ খুলে না। প্রতি মাসেই শ্রমিকদের চাকরিচ্যুতির ঘটনা ঘটছে। কারখানার বিভিন্ন বিভাগের নিয়মিত অফিসকর্মীদেরও কমপক্ষে তিন মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। গাজীপুর শিল্প পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অভিরঞ্জন দেব জানান, শিল্প ও শ্রীপুর থানার পুলিশের সঙ্গে ১৯ জানুয়ারি বেতন পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কর্তৃপক্ষ তা রক্ষা করেনি। অনেক শ্রমিক সেদিন সকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে ফিরে গেছেন।

বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে মালিকের কাছ থেকে বেতন আদায়ের ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে পুলিশ শ্রমিকদের আন্দোলন থেকে নিবৃত করে। পরে বেলা সাড়ে তিনটায় মালিকপক্ষের একজন প্রতিনিধির সঙ্গে শ্রমিক প্রতিনিধিদের লিখিত চুক্তি করে আন্দোলন স্থগিতের পরামর্শ দেওয়া হয়। কারখানাস্থল পরিদর্শণে আসা গাজীপুর শ্রম অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মহব্বত হোসেন জানান, শিল্প আইন অনুযায়ী শ্রম মাস শেষ হওয়ার সাত দিনের মধ্যে বেতন পরিশোধের নিয়ম রয়েছে। সে অনুযায়ী বেতন না দিয়ে কর্তৃপক্ষ শ্রম আইন লঙ্ঘন করেছে। কারখানার মালিক মেজর অবসরপ্রাপ্ত হেমায়েত করিমকে কারখানায় পাওয়া যায়নি। কারখানার এসব অনিয়মের ব্যাপারে মালিকপক্ষের প্রতিনিধি মিজানুর রহমান রুবেল কিছু বলতে পারেননি।

তবে তিনি জানান, ৩০ জানুয়ারি শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করে কারখানা চালু রাখা হবে।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/কাজী মোসাদ্দেক হোসেন/গাজীপুর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here