সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি ::
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় এলোপাতাড়ি গুলিতে আহত কলেজছাত্র গোলাম রাব্বি হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে। রাব্বির ডান পায়ে গুলি লাগে। বর্তমানে ঢাকার গ্রিন রোডে কমফোর্ট হাসপাতালে পায়ে অপারেশন শেষে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। আত্মীয়স্বজনদের কাছ থেকে ধারদেনা করে চলছে রাব্বির চিকিৎসা। ছেলে স্স্থু হয়ে স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারবে কি না সেই দুশ্চিন্তায় বাবা-মার চোখে ঘুম নেই।
ঢাকা কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ের মাস্টার্সের ছাত্র রাব্বি। তিনি রামপুরা এলাকায় কাঁচাবাজার নামক স্থানে একটি মেসে থাকতেন। গলাচিপা উপজেলার আমখোলা ইউনিয়নের বাঁশবুনিয়া গ্রামের হাফিজুর রহমানের একমাত্র ছেলে রাব্বি। হাফিজুর রহমান বাদুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শরীর চর্চা শিক্ষক। তিনি অসুস্থ থাকায় রাব্বি টিউশনি করে নিজের খরচ চালাতেন এবং পরিবারকেও সাহায্য করতেন। আহত রাব্বি জানান, আন্দোলনের শুরু থেকেই তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন।
১৯ জুলাই সকালে রামপুরা এলাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনে যোগ দেন রাব্বি। বেলা ১১টায় পুলিশ ও বিজিবি এ সময় আন্দোলনকারীদের ওপর সরাসরি গুলি চালায়। পায়ে গুলি লাগে রাব্বির। সহপাঠিরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে ঢাকার কমফোর্ট হাসপাতালে রাব্বির অপারেশন হয়। বর্তমানে রাব্বির পায়ে রিং বসানো।
রাব্বির মা লুৎফুন নাহার কলি বলেন, পুলিশ আমার কলিজার টুকরাকে গুলি করেছে। রাব্বির বাবা কিডনিজনিত সমস্যায় ভুগছেন। তার চিকিৎসাতেই সহায় সম্বল সব শেষ হয়ে গেছে। এখন রাব্বির চিকিৎসা কিভাবে করাবো? রাব্বি টিউশনির টাকায় এখন আমাদের সংসার চলত। স্বপ্ন ছিল ছেলে মাস্টার্স পাস করে পরিবারের হাল ধরবে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাকে সুস্থ হতে আরো ছয় মাসের বেশি সময় লাগবে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিলেও আমার বাবাতো ক্লাসে ফিরতে পারবে না। সময়মতো পাস করতে পারবে না। রাব্বির লেখাপড়ার কী অবস্থা হবে। কিভাবে মনকে বুঝ দিব। রাব্বির বাবা জানান, ছেলের চিকিৎসা চালাতে পারছি না। প্রতিদিন চার-পাঁচ হাজার টাকা লাগছে রাব্বির চিকিৎসায়। আত্মীয়স্বজনদের কাছে ধারদেনা করে চিকিৎসা চালাচ্ছি।
গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহিউদ্দিন আল হেলাল জানান, গলাচিপায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছয়জন মারা গেছেন। আহতদের সংখ্যাটি সুনিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here