গর্ভের সন্তানের স্বীকৃতি চাইতে আসেন সুবর্ণা। স্বামীকেও পেয়ে যান সামনে। জাপটে ধরেন স্বামী শাহজাহানকে। বলেন, ‘বিয়ে করেছেন। এখন বাড়িতে নিয়ে যান। ভেগে ভেগে আর কয়দিন থাকবেন।’ এ সময় শাহজাহান বলেন, ‘তুমি কে আমি চিনি না’। ধস্তাধস্তির এই দৃশ্য দেখে এগিয়ে যান সাংবাদিকরা।

গতকাল সিলেট শহরতলির কামাল বাজারে এ ঘটনা ঘটে। কামালবাজারে গতকাল বিকালে ছিল আওয়ামী লীগের সমাবেশ। সমাবেশ শুরু হওয়ার আগে শাহজাহান সমাবেশে আসেন। তখন স্থানীয় নেতাদের বক্তব্য চলছিল। এমন সময় সুবর্ণা খবর পান তার প্রেমিক শাহজাহান সমাবেশে এসেছে। বোরকা পরে তিনিও চলে আসেন সমাবেশে। সমাবেশে শাহজাহানকে দেখেই জাপটে ধরেন তিনি। বলেন, ‘আমার সঙ্গে প্রেম করেছো। বিয়ে করেছো। বলেছো বাড়িতে উঠাইবা। কিন্তু যখন আমি

সন্তান সম্ভবা হয়ে গেলাম তখন তুমি সরে দাঁড়ালে। তোমার আর কোন খবর নেই। আমি তোমাকে খুঁজে ফিরছি, অথচ পাচ্ছি না।’ একথা বলে ২৩ বছরের যুবতী সুবর্ণা জাপটে ধরেন শাহজাহানের শার্টের কলারে। এ নিয়ে শুরু হয় ধস্তাধস্তি। শাহজাহান এ সময় বলেন, ‘তুমি কে আমি চিনি না।’ এ কথা শুনে আরও রেগে যান সুবর্ণা। কেঁদে ফেলেন তিনি। এ সময় চিৎকার করে সবাইকে বলেন, ‘আমি তার (শাহজাহানের) স্ত্রী। আমার গর্ভে শাহজাহানের ৫ মাসের একটি সন্তান রয়েছে। সে আমাকে বিয়ে করেছে। বলেছে, তার বাড়িতে উঠাবে।

কিন্তু সন্তান গর্ভে আসার পর থেকে সে ভেগে ভেগে আছে। আমাকে চিনে না।’ এ দৃশ্য দেখে সামনে এগিয়ে যান সাংবাদিকরা। তারা ঘটনা জানতে চান। কিন্তু সে সুযোগ দেয়নি স্বামী শাহজাহান। সুবর্ণাকে ধরে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায় কামালবাজারে নির্জন এলাকায়। সেখানে নিয়ে সে সুবর্ণাকে বেদম মারধর করে। এ সময় শাহজাহানের সঙ্গে তার কয়েক সহকর্মীও ছিল। সুবর্ণাকে যখন শাহজাহান মারধর করছিল তখন বাজারের লোকজন জড়ো হলে কেউ এগিয়ে আসেনি তাকে বাঁচাতে। মারধরের সময় সুবর্ণা চিৎকার করে ওই একই কথা বলে, ‘আমি আমার গর্ভের সন্তানের স্বীকৃতি চাই।’ এমন সময় সেখানে আসেন লালটেকের মেম্বার আলতাফ আলী।

তিনি শাহজাহানের আত্মীয় বলে স্থানীয় লোকজন সাংবাদিকদের জানান। এ সময় আলতাফ আলীও যুবতী সুবর্ণাকে মারধর করে বাজারের একটি রাস্তা দিয়ে তাড়িয়ে দেন। পরে কয়েকজন যুবক সুবর্ণাকে ধরে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। এ সময় সুবর্ণা সাংবাদিকদের কাছে তার ফোন নম্বর দিয়ে বলেন, ‘আপনারা মোবাইল ফোনে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। আমি সবকিছু জানাবো।’ যাওয়ার আগে সুবর্ণা জানায়, শাহজাহানের সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের প্রেম ছিল। প্রেমের পর তাদের সম্পর্ক দৈহিক পর্যায়ে গড়ায়। একপর্যায়ে শাহজাহান তাকে গোপনে বিয়ে করে। বিয়ের পরপরই সুবর্ণা অন্তঃসত্ত্বা এ খবর জানার পর শাহজাহান সরে যায়। মাস খানেক শাহজাহানের দেখা পায়নি সুবর্ণা। গতকাল সমাবেশে এসেছে শুনে সেও ছুটে এসেছে স্বামীর সন্ধানে।

সুবর্ণার বাড়ি কামালবাজারের পার্শ্ববর্তী পালেরচক গ্রামে। তার পিতার নাম আব্দুন নূর। আর ছেলে শাহজাহানের বাড়িও একই গ্রামে। তার পিতার নাম তৈমুছ আলী। কিন্তু শাহাজাহান ধনাঢ্য পরিবারের ছেলে। এ কারণেই সুবর্ণাকে স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছেন না শাহজাহান। এদিকে, গতকাল সন্ধ্যায় সুবর্ণার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে ওপাশ থেকে পুরুষ কণ্ঠ ভেসে আসে। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সুবর্ণার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে জানায়, সুবর্ণা নেই। এই নম্বর তার নয়।’

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here