ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডেস্ক ::
অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক গঠিত শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আজ বলেছেন, বিগত সরকারের অধীনে প্রকল্প অনুমোদনগুলো ব্যাপকভাবে রাজনৈতিক প্রভাবিত ছিল। ওই সময়ে প্রায় সব প্রকল্পই রাজনৈতিক বিবেচনায় অনুমোদন পেয়েছে। রাজধানীর বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি ভবনে ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে দেবপ্রিয় এ মন্তব্য করেন। বৈঠকে সব মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
দেবপ্রিয় বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রভাব ও জবাবদিহিতার অভাব দুর্নীতি ও প্রকল্প তহবিলের অপব্যবহারকে সহজতর করেছে। পাশাপাশি কিছু অনৈতিক কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের সম্পৃক্ততা উন্নয়ন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা সাথে আপস করেছে।’ শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান বলেন, ‘সম্পূর্ণ উন্নয়ন প্রক্রিয়াটি প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণে ছিল। মিটিংয়ে অংশগ্রহণকারী কেউ কেউ এর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার শিকার হন, কয়েকজন হয়রানির অভিযোগ তোলেন।’ তিনি বলেন, রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষের কারণে কিছু আমলা এসব কর্মকা-ে জড়িত বলেও অভিযোগ রয়েছে।
দেবপ্রিয় বলেন, একটি উন্নয়ন প্রকল্প চালু করার আগে প্রায়শই জমি ক্রয় করা হয়, আবার তা বেশি দামে বিক্রি করা হয়। কখনও কখনও তিনগুণ দামেও বিক্রি করে সেই অর্থ সরকারী তহবিল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। অন্যান্য ক্ষেত্রে, জমির মূল্যকে কাজে লাগানোর স্বার্থে উন্নয়নের জন্য অনুপযুক্ত স্থানেও প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। তিনি বলেন, সরঞ্জাম সংগ্রহের জন্য ই-টেন্ডারিং প্রক্রিয়া হেরফের হয়েছে এবং ঠিকাদার নির্বাচনের ক্ষেত্রে অনিয়ম ছিল একটি সাধারণ বিষয়।
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান বলেন, ‘অনেক প্রকল্প অসমাপ্ত থাকা সত্ত্বেও সেগুলোকে সম্পন্ন বলা হয়। এক্ষেত্রে প্রকল্পগুলোর সম্ভাব্য অর্থনৈতিক সুবিধার বিষয়টি বিবেচনা করা হয়নি। তিনি বলেন, আজকের সভায় অংশগ্রহণকারীরা জানিয়েছেন যে, তারা প্রায়শই রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত স্থানান্তর ও চাপের শিকার হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘তারা একটি দল হিসাবে কার্যকরভাবে বা সুসংহতভাবে কাজ করতে পারেনি। যার ফলে প্রকল্পে অনিয়ম হয়েছে।’
বৈঠকে হাই-টেক পার্ক, কর্ণফুলী টানেল, জ্বালানি খাতের উদ্যোগ, কর আদায়, সামাজিক খাতের সংস্কার ও ব্যাংক ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন সুনির্দিষ্ট প্রকল্পের পর্যালোচনা করা হয়।
দেবপ্রিয় একটি পেশাদার ও স্বচ্ছ প্রশাসনের গুরুত্বের উপর জোর দেন, যা যোগ্য ও স্বাধীন পেশাদারিত্বের ক্ষমতায়ন করে। তিনি তাদের দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টিকারী প্রতিবন্ধকতা দূর করার ওপরও জোর দেন।