রাজধানীতে সিটিং সার্ভিস বলে কোনো বাস চলে না। ভাড়া নেওয়ার পরই সব লোকাল হয়ে যায়। উল্টো যাত্রীদের পকেট কাটে তারা। সিটিং সার্ভিস বন্ধের পর একটু স্বস্তি পেয়েছিলাম। এখন আবার আগের মতো হয়ে গেছে। সরকার নির্ধারিত ভাড়া নেওয়ার কথা বলা হলেও সেই আগের সিটিংয়ের ভাড়া নিচ্ছে। অথচ মাঝ রাস্তা থেকে যাত্রী তুলছে। কালশী চত্বর থেকে শেওড়া পর্যন্ত এসেই ২৫ টাকা ভাড়া দিতে হলো। অথচ গতকালই ৮ টাকা দিয়েছিলাম।
বিআরটিএ সিটিং সার্ভিস আরও ১৫ চালু রাখার ঘোষণার পর দিন আজ বুধবার মিরপুর-থেকে নতুন বাজার যাতায়াত করা জাবালে নূর পরিবহনে মাসুম নামের এক যাত্রী অনেকটা আক্ষেপের সুরে এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, সিটিং সার্ভিস বন্ধের ফলে রাস্তায় গাড়ি ছিল না। আজ সকাল ৮টা বাজে দেখুন গাড়িতে ২০ জন যাত্রীও নেই। প্রতিদিনই এমন যাত্রীই এ সময় গাড়িতে থাকে। কিন্তু সরকারি ঘোষণা পর গাড়ির মালিকেরা বাস রাস্তায় নামায়নি, যেকারণে গাড়িতে অনেককে ঠাসাঠাসি করে উঠতে হয়েছে। আর একদিন পরই সেই গাড়িই ফাঁকা হয়ে গেল।
একই গাড়ির আরেক যাত্রী বলেন, সিটিং সার্ভিস বন্ধ এবং পরে আবারও চালু করে জনগণের দুর্ভোগই বাড়লো।
কারণ দেখুন ভাড়া নিয়ে আগে হেলপারদের সঙ্গে ঝামেলা হতো না। এখন হচ্ছে।
তবে শুধু জাবালে নূর নয়, মিরপুর থেকে জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভার দিয়ে চলাচল করা অধিকাংশ যানবাহনের একই অবস্থা। সরেজমিনে দেখা গেছে, সরকার নির্ধারিত ভাড়া দিতে চাইলে তাদের বাস থেকে নামিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। কিছু কিছু বাস মাঝপথে থামিয়ে ভাড়া নেওয়ার পর আবার চালু করেছে। পরিবহন শ্রমিকদের এক জোট হয়ে যাত্রীদের সঙ্গে কথাকাটা করতে দেখা গেছে। এতে অফিসগামী যাত্রীদের বেশ বেগ পোহাতে হয়েছে। যাত্রীরা বলছেন, তারা এখন পরিবহন শ্রমিকদের হাতে জিম্মি হয়ে গেছে।
এর আগে, বুধবার বিকালে পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতা ও বিআরটিএ এর বৈঠক শেষে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটির) চেয়ারম্যান মশিয়ার রহমান জানান, আগামী ১৫ দিনের জন্য রাজধানীতে আগের মতো সিটিং সার্ভিস চলবে। একই সঙ্গে লোকাল সার্ভিস চালুর পর শুরু হওয়ার ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রমও এই সময়ে বন্ধ থাকবে। তবে সরকার নির্ধারিত চার্ট অনুযায়ী সব বাসের ভাড়া নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, নগরবাসীর পরিবহন সংকটের বিষয়টি মাথায় রেখে যাত্রীরা যদি সিটিং সার্ভিস চায়, তাহলে সিটিং সার্ভিসকে একটি আইনি কাঠামোয় আনার পরিকল্পনা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।