কে. এম. রুহুল আমীন, মোরেলগঞ্জ(বাগেরহাট)থেকেঃ
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলায় জড়াজীর্ন ঝুঁকিপূর্ন ভবন, আসবাবপত্র সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করছে ২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ বিদ্যালয় ২টি হচ্ছে উত্তর সরালীয়া গ্রামের গাউছুল হক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উপজেলার উত্তর ফুলহাতা পশ্চিমপাড়া রেজি: প্রাথমিক বিদ্যালয়।
জরুরী পরিসি’তিতে শিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের অধীনে ইউনিসেফ ও সেফ দ্যা চিলড্রেন এর সহায়তায় মুসলিম এইড বাংলাদেশ ফিল্ড অফিস এর বাস-বায়নে স্কুল আপদকালীন পরিকল্পনা বিষয়ক কর্মশালা উপলক্ষ্যে পৌর সভার ২নং ওয়ার্ড উত্তর সরালীয়া গ্রামের গাউছুল হক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানাগেল, গত কয়েক বছর ধরে বিদ্যালয় ভবনটি অত্যন- ঝুঁকিপূর্ণ, ছাদের পলেস-তরা খসেপড়ে ইতোমধ্যে শিক্ষক ছাত্রছাত্রী মিলে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। ২০০৯ সালের নভেম্বর মাসে ছাদের পলেস-রা খসে মাথায় পড়লে গুরুতর আহত হয় দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র হানিফ ফরাজী। এদুর্ঘটনার কারণে ওই ছাত্রটি বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। ১৯২৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যালয়টির বর্তমান ছাত্রছাত্রী সংখ্যা মোট ১৪২ জন। ৩কক্ষ বিশিষ্ট ভবনটি দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে অতি ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় বাধ্য হয়ে ভবন ছেরে মাঠে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস নিতে হচ্ছে। বসার বেঞ্চগুলো ভাঙ্গা থাকায় ছাত্রছাত্রীরা ইট বিছিয়ে তার উপর বসে ক্লাস করছে। বিদ্যালয় ভবনের এ সমস্যা সমাধানে উপজেলা শিক্ষা অফিসসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর বারবার আবেদন করেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি বলে জানালেন সহকারি শিক্ষিকা দিলারা আফরোজ।
অপরদিকে একইভাবে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করছে উপজেলার উত্তর ফুলহাতা পশ্চিমপাড়া রেজি: প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ১৯৮৪সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টির বর্তমান ছাত্রছাত্রী সংখ্যা ১৩০জন। ১৯৯৪সাল অর্থাৎ দু’দশক পূর্বে নির্মীত বিদ্যালয় ভবনটি এখন অত্যন- ঝূঁকিপূর্ন। সিডর ও আইলা পরবর্তি অতিরিক্ত লবনাক্ততায় ভবনের পলেস-রা খসে পরতে পরতে পুরো ভবনটি এখন পরিনত হয়েছে মরনফাঁদে। সবকটি কক্ষই পরিত্যাক্ত। ছাত্রছাত্রীদের বসার বেঞ্চগুলো ব্যবহার অনুপযোগী। ভাঙাচোরা লোহার বেঞ্চে বসতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষাথীরা। ৩য় শ্রেণীর জিয়াদ, ৫ম শ্রেণীর রাজিব খান, তানভীর, মাহফুজা, সজীব খান ও আল-আমিনসহ বেশ কয়েক জন ছাত্রছাত্রী তাদের শরীরের বিভিন্নস’ানে আঘাতের চিহ্ন দেখিয়ে বললো, ভাঙা বেঞ্চির লোহায় তাদের হাত-পা কেটে গেছে। কেওড়া নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারে বিদ্যালয় মাঠটি পানিতে ডুবে থাকে। ছাত্রছাত্রীদের ব্যবহ্নত টয়লেটটিও অনুপযোগী। প্রকৃতির ডাকে সারাদিতে রোজ-রোজ আশ-পাশের বাড়ির টয়লেটে গিয়ে নানা কটুক্তির শিকার হতে হয় তাদের। দুর্ঘটনা এড়াতে ভবন ছেরে বাধ্যহয়ে খোলা আকাশের নিচে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষকরা। বিদ্যালয়ের এ সমস্যা সমাধানে অনেক চেষ্টা করেও সংশ্লিষ্ট বিভাগের কোন সহযোগিতা মেলেনি। তাবে শিশু শিক্ষা চলমান রাখার সার্থে ইউনিসেফ ও সেভ দ্য চিলড্রেন এর সহায়তায় বে-সরকারি সংস’া মুসলিম এইড ইউকে বাংলাদেশ ফিল্ড অফিস বাগেরহাট এবিদ্যালয়টিকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ চিহিৃত করে সমপ্রতি নগদ এক লক্ষ টাকা অনুদান প্রদান করেছে। একই ভাবে পৌর সভার উত্তর সরালীয়া গ্রামের গাউছুল হক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও একলক্ষ টাকা অনুদান প্রধান করেছে বে-সরকারী সংস’া মুসলিম এইড।