আবারও অশান্ত হয়ে উঠেছে খুলনার শিল্পাঞ্চল। শ্রমিকদের বিক্ষোভে উত্তাল এ অঞ্চলের রাজপথ। অবিলম্বে মজুরী কমিশন ঘোষণা ও বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলনে মাঠে নেমেছে খুলনা-যশোর অঞ্চলের পাটকলের প্রায় অর্ধলাখ শ্রমিক।
বুধবার সকালে মিলের উৎপাদন দু’ঘন্টা বন্ধ করে রাস্তায় বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ৬ দিনের কর্মসূচীর শেষ দিন পালন করে । এ কর্মসূচী চলাকালে সকাল ১০টায় ৭ পাটকলের স্ব স্ব মিল গেটে শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় মজুরী ও উৎপাদনশীলতা কমিশনের মজুরী কাঠামোর সুপারিশমালা
বিগত ২০০৯ সালের ১জুলাই থেকে কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেয় শ্রমিক নেতারা। এ কর্মসূচীতে অবিলম্বে অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিও জানায় তারা। জাতীয় মজুরী ও উৎপাদনশীলতা কমিশনের মজুরী কাঠামোর সুপারিশমালা বিগত ২০০৯ সালের ১জুলাই থেকে কার্যকর করার দাবিতে খুলনা-যশোর অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকলের শ্রমিকরা গতকাল বুধবার বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রাখে। সকাল ৯টায় উৎপদন খালিশপুরে ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, দিঘলিয়ার ষ্টার, আটরা শিল্প এলাকার আলীম, ইর্ষ্টাণ ও নওয়াপাড়া শিল্প এলাকার কার্পেটিং ও জেজেআই জুট মিলে গেটে অবস্থান করে। সাড়ে ৯টায় পৃথক পৃথক ভাবে মিল গেটে শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় । পরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে খালিশপুর পিপলস গোলচত্বরে ক্রিসেন্ট ও প্লাটিনামের শ্রমিকরা একত্রিত হয় ।
বিক্ষোভ মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় স্ব স্ব মিল গেটে এসে শেষ হয়। প্লাটিনামের শ্রমিক সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সিবিএ’র সভাপতি কাওসার আলী মৃধা। প্রধান অতিথি ছিলেন পাটকল শ্রমিকলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সরদার মোতাহার উদ্দীন। অন্যান্যদের বক্তব্য রাখেন সিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন, সাবেক সভাপতি নূরুল হক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন, তরিকুল ইসলাম, মোল্যা মিজানুর রহমান, জাকির হোসেন ও আশরাফ হোসেন। ক্রিসেন্ট মিলের সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সিবিএ’র সভাপতি মোঃ আবু জাফর । অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক হেমায়েত উদ্দিন আজাদী, মোল্যা আব্দুর রশিদ, দ্বীন ইসলাম, আকরাম হোসেন, ্জাকির হোসেন ও ফারুক হোসেন। ষ্টার জুট মিলের সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক মোল্যা আবুল বাশার, গাজী জিয়াউর রহমান, আবু হানিফ, সাইফুর রহমান, আইয়ুব আলী, বেল্লাল হোসেন, গাজী শাহিন প্রমূখ। বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি বাস্থাবায়ন না হলে কঠোর কর্মসূচীর মাধ্যমে খুলনা অচল করে দেয়া হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সকল শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করার জন্য নেতারা সকল শ্রমিকদের প্রতি আহবান জানান। এদিকে পাট, বস্ত্র ও সূতা কল সংগ্রাম পরিষদের ডাকে মজুরী কমিশন ঘোষনা ও বাস্তবায়নসহ ২০দফা দাবিতে আটরা শিল্পাঞ্চল এলাকায় শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ইর্ষ্টাণ জুট মিল গেটের এ শ্রমিক সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সিবিএ’র সভাপতি মোঃ আলাউদ্দীন ।
প্রধান অতিথি ছিলেন সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহবায়ক কমরেড হাফিজুর রহমান ভূইয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহবায়ক মোঃ শাহ আলম। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শ্রমিক নেতা ইকবাল হোসেন, জাকির হোসেন, হারুন আর রশিদ, গাজী মাসুম, জাহাঙ্গীর হোসেন, খলিলুর রহমান, সোহরাব হোসেন ও সিদ্দিকুর রহমান। সমাবেশে বক্তরা অবিলম্বে মজুরী কমিশন ঘোষণা ও বাস্তবায়নসহ ১০দফা দাবি মেনে নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর আহবান জানান।
ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/শিমুল খান/খুলনা