মো. ইকবাল হোসেন, কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি ::
খুলনার কয়রায় ২ কোটি টাকায় নির্মিত শেওড়াপাড়া গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা মানবেতর জীবনযাপন করছে। লোনা পানিতে ডুবন্ত গুচ্ছগ্রামে নেই সুপেয় পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ। ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। বর্ষা মৌসুমে কপোতাক্ষ নদীর জলে বিলীন হচ্ছে বালি, মাটি আর কাঁচা ঘরগুলো। ইতোমধ্যে দু’শতাধিক জনবসতির দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ ঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে।
সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার শেওড়াপাড়ার কপোতাক্ষ নদের চরে নির্মিত ৬০টি জরাজীর্ণ বাসগৃহে লোনা পানি ঢুকছে। নলকূপগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। তার ও বৈদ্যুতিক পিলার থাকলেও নেই বিদ্যুৎ। নদীবেষ্টিত তিন পাশের অরক্ষিত বাঁধের মধ্যে আতংকে থাকে তারা। চোখের পলকে দু’পাশের ভাঙন দিয়ে পানি ঢুকে তলিয়ে যায় গুচ্ছগ্রামের পুকুর, রাস্তা আর আঙিনা। এভাবে অভাব আর অস্তিত্বের টানাপোড়েনে দিন কাটায় তারা।
গুচ্ছগ্রামের সুবিধাভোগী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ৬০টি ঘর পেয়ে আমরা খুশি হই। কিন্তু ঘরের মেঝের মাটি নদীর পানিতে ধসে যায়। ঝড় বৃষ্টিতে নড়বড়ে ঘরগুলো দুলতে থাকে। আঙিনা বালুতে ভরাট, জন্মে না কোনো ফসল। হাঁস-মুরগী, ছাগল-গরু পালন করে আত্মকর্মসংস্থানেরও সুযোগ নেই। পুকুরগুলো লোনা পানিতে ডুবন্ত।’
গুচ্ছগ্রামের শিক্ষার্থী নীলিমা, শান্ত, রুপা ও মিষ্টি জানায়, ‘আমাদের রাস্তা ভেঙে ধসে গেছে। বৃষ্টির সময়ে স্কুলে যেতে পারি না। রাতে বিদ্যুতের অভাবে ল্যাম্প, হারিকেন জ্বালিয়ে বই পড়ি। ঝড় বৃষ্টির রাতে বই পড়তে পারিনা।’
বাগালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ গাজী বলেন, ‘ওখানে ৪০ দিনের কাজ প্রকল্পের জন্য আবেদন করা হয়েছে। আশা করছি, আগামী এক-দেড় মাসের মধ্যে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্প সম্পন্ন হওয়ার পরে অতিরিক্ত বরাদ্দ পাওয়া যায় না। আমরা তিনবার আবেদন করেও নতুন কোনো বরাদ্দ পায়নি। টিআর, কাবিখা থেকে সংস্কার কাজ করতে হয়। কিন্তু টেকসই বাঁধ নির্মাণ অসম্ভব। আগেও বাঁধ সংস্কারের ব্যবস্থা করা হলেও নদীর তীরে হওয়ায় ভেঙে গেছে। দ্রুত ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে সংস্কার করা হবে।’
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here