
নিজস্ব প্রতিবেদক:ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় পরিবারের দুঃসময়ে এগিয়ে এলো বেসরকারি সংস্থা এডুকো, বাংলাদেশ। সম্প্রতি কয়রা ও শ্যামনগরের ২,৬৪০টি পরিবারকে আম্ফান ও কোভিড-১৯ এর ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করেছে সংস্থাটি। সোমবার (১৯ অক্টোবর) সংস্থার কমিউনিকেশনস ম্যানেজার ফারহানা খান পুষ্পার পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংস্থার তথ্যমতে, বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাসকারী জনগোষ্ঠী বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগকে মাথায় নিয়ে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে জীবন অতিবাহিত করে। খুলনা ও সাতক্ষীরা দুর্যোগপ্রবণ জেলার অন্যতম। এই অঞ্চলের মানুষগুলো যখন করোনভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছিল, ঠিক তখনই ঘূর্ণিঝড় আম্ফান গত ২১ মে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানে। ঘূর্ণিঝড়ের ফলে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসের কারণে বাঁধ ভেঙে যায় এবং হাজার হাজার মানুষ জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে। লবণাক্ত পানির স্রোতে এলাকা ভেসে যাওয়ায় দেখা দেয় খাবার তীব্র পানির সংকট। এই সংকটে মানুষের পাশে মানবিক হাত বাড়িয়েছেন এডুকো।
এডুকো বাংলাদেশ কয়রা এবং শ্যামনগরের ক্ষতিগ্রস্ত ১,৩৬৫টি পরিবারকে খাদ্য সহায়তা এবং স্বাস্থ্যসুরক্ষা উপকরণ প্রদান করেছে এবং আরও ১,২৫০টি পরিবারকে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে ২,৪৪০ টাকা করে প্রদান করেছে। বৃষ্টির পানি সংগ্রহের মাধ্যমে নিরাপদ পানি সংরক্ষণের লক্ষ্যে ৪৩২টি পরিবারের বাড়ির উঠানে পানির ট্যাঙ্ক বসানো হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের সময় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ ৪টি নলকূপও মেরামত করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত অনেক পরিবারের শিশুরা এই দুর্যোগে তাদের শিক্ষা উপকরণ হারিয়ে ফেলেছে।
তাই ক্ষতিগ্রস্ত ২,৫৫০ টি পরিবারের শিশুরা শিক্ষাসামগ্রী পেয়েছে যেন দুর্যোগের মধ্যেও তারা লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারে। এডুকো, বাংলাদেশ কেবল এইসব সহায়তাই প্রদান করেনি বরং তাদেরকে এইরকম সংকটময় পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকার ধারণাও দিয়েছে। এই প্রকল্পটি এডুকো, বাংলাদেশের অংশীদার সংস্থা উত্তরণ (সাতক্ষীরা) এবং জেজেএস (খুলনায়) এর মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়িত হয়েছে।
এডুকো বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুল হামিদ বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি কয়রা ও শ্যামনগরের আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্ত এবং কোভিড-১৯-এর প্রকোপে বিপর্যস্ত জনগোষ্ঠীর মাঝে খাদ্য, নিরাপদ পানি এবং স্বাস্থ্যসুরক্ষা উপকরণের মাধ্যমে সহায়তা করতে। এই দুই দুর্যোগে কেবল তাদের জীবন-জীবিকাই নয়, শিশুদের শিক্ষাও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
উত্তরণের নির্বাহী পরিচালক জনাব শহিদুল ইসলাম বলেন, “চলমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে আম্ফান। কারন, এর ফলে বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের বিষয়টি মাথায় রেখে দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোই ছিল আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।”
প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ও মানবিক সংস্থা এডুকো ১৯৯৯ সাল থেকে বাংলাদেশে তার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। শুরু থেকেই এডুকো সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করছে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দুর্যোগে দুস্থ মানবতার প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে সংস্থাটি।