সৈকত দত্ত, শরীয়তপুর প্রতিনিধি :: শরীয়তপুরের প্রাইভেট ক্লিনিক নার্সিং হোমে আবারও চিকিৎসা অবহেলায় মা ময়না (২৫) ও নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে শরীয়তপুর জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড় এলাকায় শরীয়তপুর নার্সিং হোম নামে প্রাইভেট ক্লিনিকে নবজাতক ও প্রসূতী মায়ের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
ঘটনা পরবর্তী চিকিৎসক, নার্স সহ সকল স্টাফ ক্লিনিক ছেড়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে ক্লিনিক স্টাফ সন্দেহে একজন আটক করেছে পুলিশ।
নিহত ময়না (২৫) ডামুড্যা উপজেলার ধানকাটি ই্উনিয়নের মডের কান্দি গ্রামের দুবাই প্রবাসী জসিম ভুইয়ার স্ত্রী। তার ২টি পুত্র সন্তান রয়েছে। তৃতীয় সন্তান প্রসবের সময় শরীয়তপুর নর্সিং হোমের অপারেশন কক্ষে ভুল চিকিৎসায় ময়নার মৃত্যু হয়।
নিহত ময়নার দেবর মোঃ শাহজালাল জানায়, তার ভাইযের স্ত্রী প্রসব বেদনায় অসুস্থ হলে শরীয়তপুর নার্সিং হোমে নিয়ে আসে। নর্মাল ডেলিভারীর আশ্বাস দিয়ে চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও সার্জন ডাঃ এম.এ দাউদ সকাল ৯টায় ময়নাকে তার নার্সিং হোমে ভর্তি করে নেয়। কিছুক্ষন পরে বলে সিজার করতে হবে তাই ১২ হাজার টাকা চুক্তি করে। দুপুর আনুমানিক ২টার দিকে অপারেশন কক্ষে প্রসূতী ময়না ও নবজাতককে মৃত্যু ফেলে রেখে ডাঃ এম.এ দাউদ, নার্স ও স্টাফ পালিয়ে যায়।
ময়নার জা রুবিনা, ননদ ফরিদা ও ভাই মোক্তার হোসেন জানায়, শরীয়তপুর নার্সিং হোমের ডাঃ এম.এ দাউদ দালালের মাধ্যমে ভুল বুঝিয়ে ময়নাকে নার্সিং হোমে আনে। সরলতার সুযোগে ডাঃ এম.এ দাউদ তাদের স্বজন ময়নাকে হত্যা করেছে। ডাঃ এম.এ দাউদ ও তার সহায়তাকারী দালালদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবী করছে তারা।
সর্বক্ষনিক শরীয়তপুর নাসিং হোমের কাছাকাছি থাকে এমন লোকদের সাথে আলাপ কালে জানায়, নার্সিং হোমের চিকিৎসক ডাঃ এম.এ দাউদ একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও সার্জন। তিনি অর্থের লোভে এখন অন্ধ হয়ে গেছেন তাই সিজারও করেন। তার স্বভাব চরিত্র এখন বেদেদের মতো হয়ে গেছে। চোখের ডাক্তার হয়ে সকল ধরণের অপারেশন করেন। এ পর্যন্ত তার হাতে ডজন খানেক প্রসুতি মায়ের মৃত্যু হয়েছে। আর রোগীরাও বেয়াক্কল দালালের প্রতারনায় শরীয়তপুর নার্সিং হোমেই আসে।
পালং মডেল থানার সহকারী পুলিশ পরিদর্শক আশরাফুল ইসলাম বলেন, প্রসুতি মা ও নবজাতক সন্তানকে মৃত্যু ফেলে রেখে ডাক্তার, নার্স সকলেই পালিয়ে গেছে। স্টাফ সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে।
শরীয়তপুর জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ মসিউর রহমান টগর বলেন, শরীয়তপুর শহরে নার্সিং হোম নামে কোন প্রাইভেট ক্লিনিক রয়েছে তা আমার জানা নাই। ঘটনার কথাও তিনি শোনেন নাই। চিকিৎসক যেই হোক তার বিরুদ্ধে এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলে জানায় সিভিল সার্জন।