কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার খলিসাকুন্ডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক, নারীলোভী, লম্পট ও ছাত্রীদের যৌন হয়রানী করার মূলনায়ক  আবুল বাশার (৩২) মাদকদ্রব্য সেবনরত অবস্থায় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে।

জানা যায়, শুক্রবার সকাল ১১ টার দিকে উপজেলার খলিসাকুন্ডি পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই জাহাঙ্গীর হোসেন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন যে, কুষ্টিয়া-মেহেরপুর মহাসড়কের রোড ডাকাতি মামলার এজাহার ভুক্ত আসামী আবুল বাশার খলিসাকুন্ডি বাজারের মোহন আলীর দোকানের সামনে অবস্থান করছে।

এ সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে মাদকদ্রব্য সেবনরত অবস্থায় আবুল বাশারকে গ্রেফতার করে খলিসাকুন্ডি পুলিশ ক্যাম্পে নিয়ে আসে। শিক্ষক নামধারী নারীলোভী, লম্পট ও ছাত্রীদের যৌন হয়রানী করার মূল নায়ক  আবুল বাশারকে ক্যাম্পে নিয়ে আসার পরপরই তাকে ছাড়িয়ে নিতে শুরু হয় দেনদরবার। এলাকার প্রভাবশালীরা আবুল বাশারকে ছাড়িয়ে নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে। ক্যাম্প ইনচার্জ গ্রেফতারকৃত আবুল বাশারকে দৌলতপুর থানায় প্রেরন করেন। এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ৩ জানুয়ারি আবুল বাশার খলিসাকুন্ডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মোটা অংকের উৎকোচ দিয়ে ইংরেজী শিক্ষক হিসেবে উক্ত বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। এর পুর্বে তিনি খলিসাকুন্ডি প্রানিত্মক নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসাবে কর্মরত ছিলেন। এ বিদ্যালয়ে কর্মরত থাকা অবস্থায় বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে যৌন হয়রানী করলে এলাকার জনগন সেই ছাত্রীর সাথে শিক্ষক আবুল বাশারের বিয়ে দিয়ে দেন। তারপরও ক্ষ্যানত্ম হয়নি শিক্ষক নামধারী আবুল বাশারের ছাত্রীদের যৌন হয়রানী করা। তার পরপরই এলাকার বহুল আলোচিত সেই লম্পট শিক্ষক আবুল বাশার ঘরে ন্ত্রী থাকা অবস্থায় ঝর্না খাতুন নামের তার আরেক ছাত্রীকে নিয়ে পরপর দুইবার পালিয়ে যায়। এঘটনার পর মেয়ের পিতা বাদি হয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে। তখন খলিসাকুন্ডি পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যরা শিক্ষক আবুল বাশারকে গ্রেফতার করে ক্যাম্পে নিয়ে আসে। শুরু হয় তাকে ছাড়িয়ে নিতে দেনদরবার। ৭৫ হাজার টাকার বিনিময়ে মুক্তি পায় শিক্ষক আবুল বাশার। তারপর ঐ বিদ্যালয়ের চাকুরি ছেড়ে যোগদান করেন খলিসাকুন্ডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। এ প্রতিষ্ঠানে অনেক সুন্দরী সুন্দরী মেয়ে লেখাপড়া করে। যেহেতু সে স্কুলের ইংরেজী শিক্ষক তাই প্রতিনিয়ত বাধ্য হয়ে অনেক ছাত্রী তার যৌন হয়রানীর শিকার হচ্ছে। কেউ লজ্জার ভয়ে উক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পারছে না। অনেকে মুখ বুজে শিক্ষক আবুল বাশারের অত্যাচার সহ্য করেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানান, আবুল বাশার বিদ্যালয়ে বসেই প্রকাশ্যে টাইগারের বোতলের মধ্যে বাংলা মদ রেখে সেবন করতো এবং তারপর ছাত্র-ছাত্রীদের উপর বিভিন্ন প্রকার হয়রানী শুরু করতো। এব্যাপারে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোরশেদ হোসেন ও প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হক ঘটনার সত্যতা শিকার করে বলেন , বিদ্যালয়ের ইংরেজী শিক্ষক আবুল বাশার মাদকদ্রব্য সেবনরত অবস্থায় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে আমরা তা শুনেছি। সে যদি দোষী প্রমানিত হয় তাহলে তার শাস্তি  হওয়া উচিত। শিক্ষক আবুল বাশার খলিসাকুন্ডি হাতিরপাড়া এলাকার মৃত ইসাহক আলীর ছেলে বলে জানা গেছে।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/কাঞ্চন কুমার/কুষ্টিয়া

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here