হাতে মেহেদীর রং, গায়ে তার বিয়ের শাড়ী গহনা, বাড়ীতে অতিথি আত্মীয়-স্বজন, ভাইবোনদের হৈ হোল্লোড় শেষ হওয়ার আগেই স্বামীর দেয়া আগুনে ঝলসে গেছে নববধূ মরিয়মের সারা শরীর। সদর উপজেলার মাইজকাপন ইউনিয়নের বেতরাহাটি গ্রামে বুধবার ভোর রাতে মর্মান্তিক এ ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার পর পরই কিশোরগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে মরিয়মকে। আশংকাজনক অবস্থায় মরিয়মকে চিকিৎসকের পরামর্শে ঢাকা পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, বেতরাহাটি গ্রামের গিয়াসউদ্দিনের কন্যা মরিয়ম (২০) এর সঙ্গে বছর খানেক আগে প্রতিবেশী আবু বাক্কারের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে মরিয়ম গর্ভবতী হয়ে পড়লে বিষয়টি প্রকাশ হয়ে পড়ে। এ নিয়ে দেন দরবারের চাপে পড়ে বাধ্য হয়ে মাত্র ১২ দিন পূর্বে আবু বাক্কার মরিয়মকে কোর্টে বিয়ে করে। কিন্ত আবু বাক্কার ও তার পরিবার এ বিয়ে মেনে না নিয়ে বিয়ের পর থেকেই মরিয়মের উপর নির্যাতন শুরু করে। বুধবার (৭ ডিসেম্বর) ভোর ৫টার দিকে প্রকৃতির ডাকে মরিয়ম ঘর থেকে বের হওয়ামাত্র স্বামী আবু বাক্কার তার ছয় সহযোগিকে নিয়ে তাকে চেপে ধরে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়। এ সময় তার আর্ত চিৎকারে পাড়া প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আবুল হোসেন মাসুম জানান মরিয়মের প্রায় সারা শরীরই পুড়ে গেছে। অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাই তাকে ঢাকা প্রেরণের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
সার্জারী ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন মরিয়ম জানান, দুই দেবর কাশেম ও শহীদ, সহযোগী বন্ধু কাঞ্চন, মামুন, লালন ও কালামকে নিয়ে তার স্বামী এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে।
মরিয়মের পাশে থাকা তার মা আম্বিয়া খাতুন জানান, বিয়ের পর থেকেই তার মেয়েকে নির্যাতন করা হচ্ছে। এর প্রতিবাদ করায় মরিয়মের বাবাকেও তিন দিন পূর্বে আবু বাক্কার পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। তিনি বর্তমানে একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ওসি মীর মোশারফ হোসেন জানান, ঘটনাটি শুনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এখনও কোন মামলা হয়নি এবং এ ব্যাপারে পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/রুমন চক্রবর্ত্তী/কিশোরগঞ্জ