ডেস্ক রিপোর্ট : : নিজ দফতরে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন হিলি কাস্টমসের উপকমিশনার। বঙ্গবন্ধুর ও মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন পটভূমির ছবি ও দৃশ্য দিয়ে সাজিয়েছেন তার অফিস। দফতরের রয়েছে বেশ কয়েকটি বুকসেলফ আর তাতে সারি সারি ভাবে সাজানো রয়েছে বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইটিসহ বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ওপর লেখা ঐতিহাসিক নানা গ্রন্থ। যে অংশ নাম দিয়েছেন ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্ণার’। যে কেউ ইচ্ছে করলেই কাস্টমসের উপকমিশনারের অফিসে প্রবেশ করে পড়তে পারছেন এসব বই।

নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানাতে এই উদ্যোগ বলছেন কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার সাইদুল আলম। তার এমন ব্যতিক্রম উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও বন্দরটির সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যবসায়ীরা।

মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান সাইদুল আলম, চোখে না দেখলেও বাবার মুখে শুনেছেন সেই একাত্তরের ভয়ংকর দৃশ্যের গল্প। ছোট থেকে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে লালন করে বেড়ে ওঠা সেই সাইদুল আলম এখন হিলি শুল্ক স্টেশনের ডেপুটি কমিশনার। সেই ভালোবাসা ও অনুপ্রেরণা থেকেই নিজ অফিস কক্ষে গড়েছেন বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নামের কর্ণার। সেই কর্ণারটিতে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর চিত্র দিয়ে সাজিয়েছেন তিনি। কর্ণারটিতে রয়েছে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা সারি সারি বই। আর এসব বই পড়তে বেশ আগ্রহ কাস্টমস সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, কর্মচারী ও স্থানীয় ব্যবসায়ী বিভিন্ন স্তরের মানুষের। এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও সচেতন মহল।

বীর মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী ও শামসুল আলম বলেন, দীর্ঘদিন পর হলেও ব্যক্তি পর্যায়ের এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যা সত্যিই আমাদের অনেক ভালো লেগেছে। আমরা কর্ণারটি পরিদর্শন করে বইগুলো দেখলাম।

তারা আরো জানান, যেহেতু অফিসের ভেতরে এটি তৈরি করা হয়েছে, তাই এখানে সহজে চাইলে যে কেউ প্রবেশ করে বই পড়তে পারবে না। তাই এটি সবার জন্য যদি উন্মুক্ত করে দেয়া হয় তাহলে সবাই এসে বই পড়তে পারবে।

বই পড়তে আসা সিএন্ডএফ এজেন্টের কর্মচারী মাহবুব আলম বলেন, আমাদের উপকমিশনার ভালো একটি উদ্যোগ নিয়েছেন। আগে আমরা কাজের ফাঁকে অবসর সময়ে বসে বসে গল্প করে সময় কাটাতাম। আর এখন স্যারে অফিস কক্ষ বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নামের একটি কর্ণার বানিয়েছেন। যেখানে রয়েছে অসংখ্য বই। আমরা অবসর সময়ে গিয়ে সেখান থেকে বই  নিয়ে এসে পড়ে সময় কাটাতে পারি। বইগুলো পড়লে আমরা ইতিহাস ও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে পারি।

হিলি কাস্টমসের উপকমিশনার সাইদুল আলম বলেন, আমি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। ছোটবেলা থেকে পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর গল্প শুনেছি। সেখান থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে লালন করে ও মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দিতেই এই কর্ণারটি বানিয়েছি। এ ছাড়াও বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্ণারটির মাধ্যমে নতুন প্রজন্মরা ইতিহাস সম্পর্কে জানবে।

তিনি আরো বলেন, নিজ অর্থায়নে ও কাস্টমসের সকল সহযোদ্ধাদের সার্বিক সহযোগিতায় এটি তৈরি করেছি। এখানে বিভিন্ন লেখকের মোট ২৬৭টি বই আছে। যার মধ্যে শুধু বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা ১৫০টি বই রয়েছে। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের ও বঙ্গবন্ধুর চিত্র দিয়ে সাজানো হয়েছে এই কর্ণারটি।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here