এক সময়ের অর্থ চিঠি বা বার্তা আদান প্রদানের গুরুত্বপূর্ন মাধ্যম, আজকের এই ডাকঘর। কিন্তু আজ সময় ও কালের বির্বতনে হারিয়ে যেতে বসেছে ডাকঘরের কার্যক্রম। অফিস ও লোকবল সবই আছে কিন্তু নেই কাজ, থাকলেও চলছে সেই পুরোনো নিয়মেই। নতুন দিনের নতুন তথ্য-প্রযুক্তি ব্যাংক ও কুরিয়ার সার্ভিসের দাপটে থমকে যাচ্ছে বর্তমান ডাকঘরের কার্যক্রম। বর্তমানে ডাকঘরের কার্যক্রমকে কিছুটা অত্যাধুনিক করলেও সময়ের তুলনাই তা অপ্রতুল। আগে মানুষ ডাকঘরের মাধ্যমে টাকা বা চিঠিপত্র আদান-প্রদান করত তখন তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার এত অত্যাধুনিক ছিলনা। চিঠি অর্থ বা অন্যান্য সব কিছুই আনা-নেয়া করা হত যানবাহনে, ছিলনা ইন্টারনেটের এত ব্যবহার। সময়ের পরিবর্তনে বর্তমানে দেশের বেসরকারি অনেক ব্যাংক ও কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যেগুলো ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। অনলাইনের মাধ্যমে মহূর্তেই দেশ তথা পৃথিবীর এক প্রানত্ম থেকে অন্য প্রানেত্ম পৌছে দিচ্ছে তথ্য। ফলে সহজ ও দ্রুততম হয়ে উঠেছে অফিসিয়াল কার্যক্রম ও অর্থ লেনদেন। কিন্তু ডাকঘরে দক্ষকর্মী ও নতুন তথ্য-প্রযুক্তির কার্যকারিতা তুলনা মূলক কম থাকায় মানুষ ডাকঘর বিমূখ হয়ে গেছে।  শূধু তাই নই, নেই অন্যান্য আরো অনেক সেবা। তবে গত বছরের মার্চ মাস থেকে নতুন কিছু কার্যক্রম চালু করায় মানুষ আবার ফিরে আসছে ডাকঘরে,নিচ্ছে বিভিন্ন ধরনের সেবা। বর্তমানে ইমটিএস ও পোস্টাল ক্যাশকার্ড নামের দুইটি নতুন সেবা চালু করেছে পোষ্টঅফিস, ইমটিএস এর মাধ্যমে দেশের যে কোন প্রানেত্মর পোষ্ট অফিসে টাকা প্রদান করা যাচ্ছে এবং পোস্টাল ক্যাশকার্ড ব্যবহার করা যাচ্ছে ব্যাংকের এটিএম কার্ডের মত। যেটি দিয়ে দেশের যে কোন পোষ্ট অফিসে টাকা জমা এবং উত্তোলন করছে মানুষ ।এ বিষয়ে কুষ্টিয়া প্রধান ডাকঘরের পোষ্টমাষ্টার জেনারেল দুলাল চন্দ্র মন্ডল বলেন, বর্তমান সরকার দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। আর তারই ধারাবাহিকতায় পূর্বের সবরকম কার্যক্রম বহাল রেখে এবং বর্তমানে আরো নতুন কিছু সেবা চালু করেছে । সরজমিনে মঙ্গলবার কুষ্টিয়া প্রধান ডাকঘরে যেয়ে দেখা যায়, সেবা নিতে আসা মানুষের অনেক ভিড়। খোজ নিয়ে জানা যায়, কুষ্টিয়া প্রধান ডাকঘরে মোট ৭৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকার কথা  কিন্তু আছে ৪৬ জন। পুরাতন অনেকে অবসরে চলে গেছেন কিন্তু  সেই আসনে নতুন কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়নি। ফলে এভাবেই কাজ করতে হচ্ছে অফিসে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। সেবা নিতে আসা কয়েকজন মানুষকে ডাকঘরের সেবা সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা জানান, ডাকঘরের বর্তমান কার্যক্রম বহাল রেখে সেবার মান আরো বাড়ানো প্রয়োজন। আধুনিক প্রযুক্তি আর ব্যাংক-কুরিয়ার সার্ভিসের সাথে তাল মিলিয়ে বর্তমান ও সময় উপযোগী উন্নত সেবা ও তথ্য প্রযুক্তির আদলে ডাকঘরের কার্যক্রম পরিচালনা করা হলে হয়তো আবার সক্রিয় এবং অন্যতম প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠতে পারে এই ডাকঘর। ফিরে পেতে পারে পূর্বের প্রাণচাঞ্চল্যতা। আবার হতে পারে অর্থ চিঠি বা বার্তা আদান-প্রদানের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। এতে সরকারী কোষাগারে জমা পড়বে মোটা অংকের মুনাফা।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/কাঞ্চন কুমার/কুষ্টিয়া

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here