সিংড়া : নাটোরের সিংড়া উপজেলার আলহাজ্ব জালাল উদ্দিন কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয়ের সুপারিন্টেডেন্ট নজরুল ইসলাম অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে অর্থের বিনিময়ে শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্য করায় ও অবৈধ ভাবে নিয়োগ প্রাপ্ত ছয় শিক্ষকসহ ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে সিংড়া সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে (মামলা নং-৩৫৬/১৩)।
সম্প্রতি ওই বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রতিষ্ঠাতা সুপার মাহাবুবুর রহমান এই মামলা দায়ের করেন।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সুপার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই গোপনে সম্পূর্ণ অবৈধ পন্থায় ৬জনকে শূন্যপদে নিয়োগ সম্পন্ন করায় সরকারী অর্থ অপচয়ের পথ উন্মুক্ত হয়েছে। নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের চাকুরী পাওয়ার কোন যোগ্যতা নেই। কমিটির সিদ্ধানত্ম ছাড়াই গোপনে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে তাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাছাড়া সুপার নজরম্নল ইসলাম শিক্ষা নীতিমালা বহির্ভূত এবং বোর্ডের নীতিমালাকে অমান্য করে অবৈধ ভাবে সুপার পদে নিয়োগ নেন। অথচ ওই পদে তার নূন্যতম যোগ্যতা নেই।
অভিযোগ রয়েছে, ভূয়া ডিজি প্রতিনিধি সাজিয়ে জাল স্বাক্ষর ও জাল নিবন্ধন সার্টিফিকেট দিয়ে নিয়োগ নেন। অথচ এসএসসি ও এইচএসসিতে ৩য় বিভাগ প্রাপ্ত একজন ব্যক্তি কোন ক্ষমতা বলে রাতারাতি সুপার হন তা নিয়ে নানা প্রশ্নের দানা বেধেছে শিক্ষক সমাজ ও এলাকাবাসীর মনে। ইতোপূর্বে ২৪শে জুন ২০১২খ্রিঃ তারিখে ট্রেড ইন্সট্রাক্টর নজরুল ইসলামকে সুপার হিসেবে এমপিও ভূক্ত না করার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর স্থানীয় প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার (এমপি) লিখিত অভিযোগ পত্র পাঠান।
তাছাড়া ২০১০সালে জেলা শিক্ষা অফিসার ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ নজরুল ইসলামকে সুপার পদে নিয়োগে অনিয়মের কারণে দুইবার কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠান। ২০০৮সালের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের শিক্ষা পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম সিদ্দিকির এক তদন্ত প্রতিবেদনে জানা যায় বর্তমান সুপার নজরুল ইসলামের সনদ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সরকার কর্তৃক অনুমোদন না থাকায় তার সনদ গ্রহণযোগ্য নহে।
অভিযোগ রয়েছে, সুপারের যোগ সাজসে অত্র প্রতিষ্ঠানের রেজুলেশন খাতায় পাতা নম্বর ছাড়াই স্বাড়্গর করা, ভূয়া শিড়্গক নিবন্ধন দিয়ে চাকুরীসহ সীমাহীন দূর্নীতি ও অনিয়মগুলো নিয়ম কানুনে পরিণত হয়েছে।
অত্র প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী শীপ শংকর দত্ত ও আহ শামীম হাসানের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে স্টার্ফদের কোন কিছু জানা নেই এবং কোন অফিসিয়াল কাগজ পত্রও নেই। তাছাড়া প্রায় দেড় বছর ধরে প্রতিষ্ঠানে কোন মিটিং হয়নি। সুপার নিজেই তাদের নিয়োগ দিয়েছে বলে তারা জানান।
সুপার নজরুল ইসলামের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা। তবে মামলার বিষয়টি স্বীকার করে জানান ইন্টারনাল ব্যাপার, এটা নিজস্ব ব্যক্তিগত ক্যাচাল।
অত্র প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ইউএনও সালমা খাতুন মামলার বিষয়টি স্বীকার করে জানান, বিষয়টি তদন্তকরে দেখা হচ্ছে।
শামছুজ্জোহা সুমন/